এক ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দে দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত কর্মকর্তার দেওয়া নির্দেশ অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছে হাই কোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ভার্চুয়াল হাই কোর্ট বেঞ্চ গতকাল রোববার এ রায় দেয়। আদালতে রুলের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রাকিবুল হাসান। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শাহীন আহমেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার। বেলায়েত হোসেন নামে এক ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দে দুদকের তদন্ত কর্মকর্তার নির্দেশ অবৈধ ঘোষণা করে আদালতের রায় এসেছে। খবর বিডিনিউজের।
আইনজীবী রাকিবুল হাসান বলেন, নিয়মটা হচ্ছে কোনো নাগরিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে হলে প্রথমে কমিশনের অনুমোদন নিতে হবে। তারপর লিখিত আবেদন করে আদালতের আদেশ নিতে হবে। কোনো নাগরিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে আদেশ দেওয়ার এখতিয়ার হচ্ছে জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত বা বিশেষ জজ আদালতের। কিন্তু বেলায়েত হোসেনের ব্যাংক হিসাব জব্দ করার ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। তদন্তকারী কর্মকর্তা তার ইচ্ছামতো আদেশ দিয়েছিলেন এই ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবটি জব্দ করার জন্য।
তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে একটি ধারণা আছে, দুদক কর্মকর্তারা যে কোনো ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে পারে। কিন্তু আসলে তা পারেন না। কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে আদালতের আদেশ ছাড়া কোনো নাগরিকের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা যাবে না। আর এ কারণেই দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তার আদেশটি অবৈধ ঘোষণা করেছেন হাই কোর্ট।
চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের কক্সবাজার শাখার ব্যবস্থাপককে স্থানীয় বেলায়েত হোসেনের ব্যাংক হিসাব জব্দের নির্দেশ দিয়েছিলেন দুদকের চট্টগ্রাম-২ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন। ব্যাংক হিসাব জব্দের ওই নির্দেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বেলায়েত হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত ২২ ফেব্রুয়ারি হাই কোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেয়।
বেলায়েতের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে দুদকের ওই উপ-সহকারী পরিচালকের দেওয়া ৬ জানুয়ারির নির্দেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় রুলে। দুদক চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম-২ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মো. শরীফ উদ্দিন, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও কক্সবাজার শাখার ব্যবস্থাপককে তিন সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
গত ২৩ জুন এ রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাই কোর্ট গতকাল রায়ের জন্য রাখে। রায়ে রুলটি যথাযথ ঘোষণা করা হয়।