ট্রাস্ট রিসিপ্ট হিসেবে কয়েকটি চেক জামানত রাখা হয়। প্রধান কার্যালয়ের ঋণ মঞ্জুরি গ্রহণের আগেই নামমাত্র মার্জিনে এলসি খোলা হয়। বোর্ড সভায় উপস্থাপনের আগেই নির্বাহী কমিটির মাধ্যমে পাস করিয়ে বা অনুমোদন দেয়া হয়। একপর্যায়ে আত্মসাৎ করা হয় সাউথ-ইস্ট ব্যাংকের ১৩৬ কোটি টাকা। এ ঘটনায় দায়ের করা দুদকের মামলায় এজহারভুক্ত দুই ব্যাংক কর্মকর্তাকে বাদ দিয়ে ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই তৎকালিন তদন্ত কর্মকর্তা চার্জশিট দাখিল করেন। বিষয়টি উচ্চ আদালতে গেলে উক্ত দুই ব্যাংক কর্মকর্তাকে অন্তর্ভুক্ত করতে নির্দেশ দেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় দুই ব্যাংক কর্মকর্তাকে অন্তর্ভুক্ত করে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেছেন পরবর্তীতে নিয়োজিত তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. ফখরুল ইসলাম।
গতকাল চট্টগ্রাম আদালতে এ দুজনসহ মোট ৬ জনের বিরুদ্ধে সম্পূরক এ চার্জশিট দাখিল করেন তিনি। সম্পূরক চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী (জামিনদার), তার স্ত্রী রাইজিং স্টিল মিল লিমিটেডের চেয়ারম্যান জামিলা নাজনীন মাওলা, ছোট ভাই একই প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আমজাদ হোসেন চৌধুরী ও পরিচালক জসীম উদ্দিন চৌধুরী, সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুবুল আলম এবং ব্যাংকটির হালিশহর শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান (সাব্বির)। দুদকের আইনজীবী কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাবলু সম্পূরক চার্জশিট দাখিলের বিষয়টি আজাদীকে নিশ্চিত করে বলেন, দুদক প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে সম্পূরক এ চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। আগামী ধার্য তারিখে এটি গ্রহণ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আদালতসূত্র জানায়, ২০১৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর আসলাম চৌধুরীসহ মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে নগরীর হালিশহর থানায় মামলাটি দায়ের করেন দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়-১ এর উপপরিচালক ও বর্তমানে দুদক প্রধান কার্যালয়ে উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত মো. মোশারফ হোসেন মৃধা। মামলার এজহারে বলা হয়, পুরাতন জাহাজ আমদানির নামে সাউথ ইস্ট ব্যাংকের হালিশহর শাখা থেকে ১৩৫ কোটি ৮০ লাখ ৪০ হাজার ২০৮ টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করেন আসলাম চৌধুরীসহ তার পারিবারিক মালিকানাধীন শিল্পপ্রতিষ্ঠান রাইজিং গ্রুপের চেয়ারম্যান, এমডি ও পরিচালক। নামমাত্র মার্জিনে এলসি খুলে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় তারা বিপুল অংকের এ ঋণ হাতিয়ে নেন। যা দণ্ডবিধির ৪২০, ৪০৯ ও ১২০ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আদালতসূত্র আরো জানায়, মামলার আসামির মধ্যে আসলাম চৌধুরীই শুধু কারাগারে রয়েছেন। বাকিরা জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ১৫ মে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে। সেই থেকে তিনি কারাগারেই রয়েছেন।