আসছে অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটেনি বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল শুক্রবার সকালে বাজেটের ওপর দলের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, মহামারীকালে মানুষের জীবন-জীবিকার স্বাভাবিক গতি ফিরে পেতে ও বেঁচে থাকার নিশ্চয়তার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণে এই বাজেট সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সুশাসন ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ বাজেটে অনুপস্থিত। এককথায়, এই বাজেটে, বাংলাদেশের মানুষের যে আশা-আকাঙ্খা, সেটার প্রতিফলন হয়নি। খবর বিডিনিউজের।
মির্জা ফখরুল বলেন, বাজেটে হতদরিদ্র ও শ্রমিকদের প্রত্যাশিত প্রণোদনা উপেক্ষিত হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সমপ্রসারণের নামে যে সামান্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে তা নিতান্তই অপ্রতুল। সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মধ্যবিত্তকে অন্তর্ভুক্ত করার কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংসদ ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আহম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট উপস্থাপন করেন।
স্বাস্থ্যখাতে জিডিপির ৫ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্বাস্থ্য খাত নিয়ে এতো কথা বলা হলেও এই খাতে বরাদ্দ জিডিপির সেই ১ শতাংশের মধ্যেই আছে- এটা খুবই দুঃখের কথা। এই বরাদ্দ দিয়ে স্বাস্থ্য খাতের চাহিদা মিটবে না। করোনা টিকা প্রদানের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। সরকার ২৫ লাখ মানুষকে মাসে টিকা দেওয়ার কথা বলেছেন। সেটা কবে থেকে কার্যকর হবে, কীভাবে হবে, সে সম্পর্কে কিছু নিশ্চিত করে বলা হয়নি।
বাজেটে এসএমই খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সবচেয়ে বেশি কর্মসংস্থান এই খাতে। কিন্তু সরকারের প্রণোদনা পেলেন মূলত বড় শিল্পমালিকেরা।
মুদ্রাস্ফীতির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, গত এপ্রিলে গড়ে মূল্যস্ফীতি ছিল ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। এবারের বাজেটে তা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য অনেক আগেই মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে চলে গেছে। এই লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবভিত্তিক নয়।
বাজেটে মাছ চাষ খাতে প্রস্তাবিত কর বাতিল এবং ব্যক্তিশ্রেণির করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধির দাবি জানান তিনি।
করপোরেট করহার ছাড় প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ব্যবসায়িক টার্নওভার কর হারও কমেছে। অর্থমন্ত্রী দুই হাত ভরে দিয়েছেন ব্যবসায়ীদের। উনি নিজেও ব্যবসায়ী। বাজেটে হতাশ মধ্যবিত্তরা, খুশি ব্যবসায়ী মহল।
সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট সৈয়দ মো. শামসুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু ও চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।