ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ, কোম্পানির নয় : বাংলাদেশ ব্যাংক

| মঙ্গলবার , ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ at ৯:০০ পূর্বাহ্ণ

সরকারের পট পরিবর্তনের পর বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হলেও তাদের মালিকানাধীন বা সংশ্লিষ্ট কোনো কোম্পানির হিসাবের লেনদেন অবরুদ্ধ বা বন্ধ করা হয়নি বলে এক ব্যাখ্যায় স্পষ্ট করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

আর্থিক খাতের গোয়েন্দা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) সরকার পতনের পর থেকে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের অনেক মন্ত্রী ও রাজনৈতিক নেতাসহ সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করে। ব্যাংকাররা বলছেন, এরপর কোনো কোনো ব্যাংক সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা ছাড়াই সেসব ব্যক্তিদের সঙ্গে জড়িত কোম্পানিগুলোর ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করেছে। এতে কোম্পানিগুলোর দৈনন্দিন লেনদেন ও কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। একই সঙ্গে বেতনভাতা পরিশোধ, আমদানিরপ্তানিসহ অন্য কোম্পানির সঙ্গেও লেনদেনে নানা রকম সমস্যা তৈরি হচ্ছে।

এটি নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চলছে বলে তুলে ধরেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল সোমবার বিএফআইইউ কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ করেনি বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।

আগের দিন রোববার এ নিয়ে কথা বলেন গভর্নরও। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবরুদ্ধ করা হয়নি। কেউ অনিয়ম করলেও তার প্রাতিষ্ঠানিক হিসাব চালু রাখা হয়েছে, যাতে ব্যবসাবাণিজ্য স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে। এ বিষয়ে সুযোগ সন্ধানীরা নেতিবাচক প্রচারণা চালাচ্ছে। খবর বিডিনিউজের।

ঋণ ও অর্থপাচার নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠার পর বিএফআইইউ বেশ কয়েকটি আলোচিত ও শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক গ্রুপের মালিক ও অংশীদারদের ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করে। দেশের বাইরে এসব ব্যক্তি কত টাকা পাচার করেছে তা নিয়েও অনুসন্ধান করছে সংস্থাটি।

এ নিয়ে জটিলতা দেখা দেওয়ার পর সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, ব্যক্তিগত ও একক ব্যক্তি মালিকানাধীন কোম্পানির নামে পরিচালিত হিসাব ব্যতীত ব্যক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো কোম্পানির হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়নি।

এতে বলা হয়, সম্প্রতি বিভিন্ন মিডিয়া রিপোর্ট, সন্দেহজনক লেনদেন রিপোর্ট এবং বিএফআইইউতে দাখিল করা অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএফআইইউ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ২৩ () () ধারা মোতাবেক বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে মানি লন্ডারিং অপরাধ সন্দেহে কতিপয় ব্যক্তি ও একক ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে পরিচালিত হিসাবের লেনদেন স্থগিতের নির্দেশনা প্রদান করা হয়। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো উক্ত নির্দেশনার বাইরেও ব্যক্তির সাথে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির হিসাবগুলোর লেনদেন স্থগিত করেছে; ফলে উক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহের দৈনন্দিন কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বেতন প্রদান ও অনেক ক্ষেত্রে আমদানিরপ্তানি সংশ্লিষ্ট লেনদেন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর এ ধরনের কার্যক্রম অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে তুলে ধরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এর ফলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীরা ভোগান্তিতে পড়তে পারে, যা মোটেই কাম্য নয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের সম্মান জানাবে সরকার
পরবর্তী নিবন্ধক্যান্সার রোগীর আধুনিক চিকিৎসায় মা ও শিশু হাসপাতাল অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে