প্রতাপশালী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ নারী দলের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হচ্ছে আজ। এই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খুব বেশি ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা নেই বাংলার নারীদের। তারপরও মনোবল হারাতে চায়না বাংলাদশ নারী দল। বরং বোলিং দিয়েই বিশ্বসেরা অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে চায়। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচটি শুরু হবে আজ সকাল ৯ টায়। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানার ভরসার নাম তার দলের বোলিং। সামপ্রতিক সময়ে মেয়েদের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাফল্যের বড় অংশ এসেছে বোলারদের নৈপুণ্যে। স্কোরবোর্ডে লড়াই করার পুঁজি পেলেই প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের আটকে রাখার কাজটি দারুণভাবেই করেছেন নাহিদা আক্তার, মারুফা আক্তার, রাবেয়া খানরা। সবশেষ কয়েক সিরিজে ঘরের মাঠে ভারত ও পাকিস্তান, দেশের বাইরে দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ রেখেছেন বাংলার নারী বোলাররা। ২০২৩ সালে ১১ ওয়ানডেতে ২০ উইকেট নিয়েছেন নাহিদা। দলের সাফল্যে বড় অবদান রেখে আইসিসির বর্ষসেরা ওয়ানডে একাদশেও জায়গা পেয়েছেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার। এছাড়া লেগ স্পিনে রাবেয়া নিয়েছে ৯ ম্যাচে ১৪ উইকেট। বেশিরভাগ ম্যাচে একমাত্র পেসার হিসেবে খেলা মারুফা ৯ ম্যাচে নিয়েছেন ১৪ উইকেট।
সিরিজ শুরুর আগের দিন গতকাল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার বললেন, অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং লাইন আপ নাড়িয়ে দিয়েই জয়ের পথ খুঁজবেন তারা। অস্ট্রেলিয়া ৪–৫ জন ব্যাটারের ওপর অনেক বেশি নির্ভর করে। আমাদের টার্গেট থাকবে, তাদের সেই শক্তির জায়গাটা যেন ভেঙে দিতে পারি, যত দ্রুত সম্ভব হয়। আর বোলিংয়ে আমরা সেরা, এটা সবসময়ই বলতে হবে। মিরপুর বা যে কোনো জায়গায় হোক, বোলাররা অনেক বড় বড় জায়গায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভালো পারফর্ম করেছে। সেদিক থেকে অনেক আত্মবিশ্বাসী আমি। যেহেতু ব্যাটিং নির্ভর দল ওরা। তাই তাদের ব্যাটিং ইউনিট যদি আমরা ধসিয়ে দিতে পারি, যদি সুযোগ না দেই, ভালো বোলিং বাস্তবায়ন করতে পারি, ভালো হবে আমাদের জন্য। বাংলাদেশের বোলিং শক্তি সম্পর্কে ভালো ধারণা আছে প্রতিপক্ষেরও। নাহিদা, রাবেয়া, ফাহিমাদের নিয়ে গড়া স্পিন আক্রমণের কথা আলাদা করেই বললেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক অ্যালিসা হিলি। তাদের স্কোয়াডের দিকে যদি দেখেন, তারা অনেক স্কিলসমৃদ্ধ। বিশেষ করে বোলিং আক্রমণে অনেক স্পিনার আছে, যেটা লক্ষণীয়। অবশ্যই উপমহাদেশের বাইরে থেকে আসা যেকোনো দলের জন্য সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ এটি। এই কন্ডিশনে এসে ওই স্পিনের মোকাবিলা করা সত্যিই বড় চ্যালেঞ্জ।
গত বছর ভারতের বিপক্ষে ড্র করা সিরিজে ৩ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৭ উইকেট নেন মারুফা। আর স্পিনে নাহিদা, রাবেয়া ও সুলতানা মিলে ধরেন ১৫ শিকার। ওই সিরিজে ভারতের ব্যাটারদের কঠিন পরীক্ষা দিতে দেখে বাংলাদেশের বোলিং সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পেয়েছেন হিলি। অসি অধিনায়ক বলেন আমি আলাদা করে কারও নাম বলব না। তবে আমার মতে, বোলিং বিভাগ বাংলাদেশের সত্যিকারের শক্তির জায়গা। ভারতের বিপক্ষে তাদের সিরিজের কিছুটা দেখেছি এবং এই কন্ডিশনে ভারতের আগ্রাসী ব্যাটিং লাইন আপের জন্য কাজটা সত্যিই চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছিল তারা। তাই আমার মতে, ব্যাটিং ইউনিট হিসেবে আমাদের পাল্টা আক্রমণ করতে হবে এবং খুব দ্রুত কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। বাংলাদেশ এবং অস্ট্রেরিয়া নারী দল এর আগে একবার মাত্র মুখোমুখি হয়েছে ওয়ানডে ক্রিকেটে। আর সে ম্যাচে জয়টা অস্ট্রেলিয়ারই।