জাতীয় ক্রিকেট লিগের পঞ্চম রাউন্ডের রাজশাহী বিভাগ এবং স্বাগতিক চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যকার চারদিনের ম্যাচের প্রথম দিনেই ছড়ি ঘুরিয়েছে বোলাররা। জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে গতকাল থেকে শুরু হওয়া ম্যাচের প্রথম দিনেই পতন হয়েছে ১৮ উইকেটের। রাজশাহী বিভাগকে ১১২ রানে অল আউট করে দিয়ে চট্টগ্রাম বিভাগ নিজেরাও পড়েছে মহা বিপদে। যদিও দিন শেষে ৬১ রানে এগিয়ে আছে চট্টগ্রাম। তবে হারিয়ে ফেলেছে ৮টি উইকেট। রাজশাহীর প্রথম ইনিংসের ১১২ রানের জবাবে প্রথম দিন শেষে চট্টগ্রাম করেছে ৮ উইকেটে ১৭৩ রান। রাজশাহীকে স্বল্প রানে বেধে ফেরতে সবচাইতে বড় ভুমিকা রেখেছে পেসার ফাহাদ হোসেন। এই তরুণ ৩১ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট।
সকালে টসে জিতে প্রতিপক্ষকে ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানায় চট্টগ্রামের অধিনায়ক ইয়াসির আলি রাব্বি। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করতে বেশি সময় নেয়নি চট্টগ্রামের পেসাররা। ১৩ রানের মাথায় প্রথম আঘাত হানেন ফাহাদ হোসেন। বোল্ড করে ফেরান রাজশাহীর ওপেনার সাব্বির হোসেনকে। ৩৭ রানের মাথায় জাতীয় দলের ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমকে এলবিডব্লিউ করে ফেরান ইফরান হোসেন। ১৩ রান করেন তানজিদ। ৬ রান পর এবার আরেক পেসার আহমেদ শরীফের আঘাত। তার শিকার রহমত উল্লাহ আলি। ১৯ রান করা আলিকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন আহমেদ শরীফ। এরপর কেবলই ফাহাদ হোসেন শো। তার পেস আগুনে পুড়ে একে একে সাজঘরে ফিরতে থাকে রাজশাহীর ব্যাটাররা। মাঝখানে গোলাম কিবরিয়া যা একটু প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তার ২৩ রানের প্রতিরোধ থামে আশরাফুল হাসানের ঘুর্নিতে। শেষ পর্যন্ত ১১২ রানে অল আউট হয় রাজশাহী মাত্র ৩৪ ওভারে। শেষ দিকে ১৭ রান করেন ওয়াসি সিদ্দিকী। ফাহাদ হোসেনের ৫ উইকেট ছাড়া ২টি করে উইকেট নিয়েছেন ইফরান হোসেন এবং আশরাফুল হাসান। জবাবে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করেছিল চট্টগ্রামের দুই ওপেনার সাদিকুর রহমান এবং পারভেজ হোসেন ইমন। মনে হচ্ছিল এ দুজনই দিন পার করে দেবেন। কিন্তু ৯৬ রানের দারুণ জুটি গড়ার পর মাত্র ১ রানের ব্যবধানে ফিরেন দুজনই। ওয়াসি সিদ্দিকীর লেগ স্পিনে বিভ্রান্ত ওয়ালিদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৪১ রান করা ইমন। এক রান পর সেই ওয়াসির বলেই ফিরেন সাদিকুর। আক্রমণাত্নক ব্যাটিং করা সাদিকুর ৫৭ বলে করেন ৫৪ রান। মেরেছেন ৬টি চার এবং একটি ছক্কা। কক্সবাজার রাউন্ডে সেঞ্চুরি করা সাজ্জাদুল হক রিপন পারেননি রানের খাতা খুলতে। তাকে ফেরান মোহর শেখ। দলের সবচাইতে বড় দুই ভরসা ইয়াসির আলি রাব্বি এবং ইরফান শুক্কুর ভাল কিছুর ইঙ্গিত দিয়েও পারলেননা জুটিটা বড় করতে। নিজের তৃতীয় শিকার বানিয়ে ইরফানকে ফেরান ওয়াসি। ১৪ বলে ১০ রান করেন তিনি। সাব্বির হোসেনের শিকার হয়ে ফিরেন ১৭ রান করা রাব্বি। ৩৩ তম ওভারের চতুর্থ এবং পঞ্চম বলে যথাক্রমে নাঈম হাসান এবং ইফরান হোসেনকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেছিলেন সাব্বির হোসেন। সেটা কোনমতে ঠেকান আহমেদ শরীফ। অষ্টম উইকেটে শামীম হোসেন এবং আহমেদ শরীফ মিলে ৩২ রান যোগ করেন। ২০ রান করা আহমেদ শরীফকে ফিরিয়ে এজুটি ভাঙেন আলি ওয়ালিদ। আশরাফুল হাসানকে নিয়ে দিনের বাকি সময়টা শেষ করেন শামীম হোসেন পাটোয়ারী। ১৯ রানে অপরাজিত রয়েছেন শামীম। ৬১ রানে এগিয়ে থাকা চট্টগ্রাম আজ বাকি দুই উইকেট নিয়ে নিজেদের লিডটাকে কতদূর নিয়ে যেতে পারে সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা। রাজশাহী বিভাগের পক্ষে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন ওয়াসি সিদ্দিকী এবং সাব্বির হোসেন।