রাঙ্গুনিয়ায় বোরো আবাদের জোর প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে কিছু জমিতে বোরো আবাদ শুরু হয়েছে। কোথাও আবাদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। তবে তীব্র শীতের প্রভাবে বীজতলায় ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এদিকে কৃষকদের পাশে থেকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তারা।
উপ–সহকারী কৃষি কর্মকর্তা লোকন বিশ্বাস জানান, উপজেলায় এবার ৭ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৭০০ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড, বাকিগুলোতে অন্যান্য উফশী জাতের আবাদ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে গত ডিসেম্বর থেকেই কোনো কোনো কৃষক আগাম বীজতলা তৈরি করে এখন রোপণ শুরু করে দিয়েছেন। তবে চারার ঘাটতি পূরণে এখনো বীজতলা তৈরির কাজ চলছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রামের শস্যভান্ডারখ্যাত রাঙ্গুনিয়ার গুমাইবিলে বোরো ধানের বীজতলা পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে পুরোদমে শুরু হবে বোরো ধান রোপণ মৌসুম। এই লক্ষ্যে গুমাইবিলের প্রায় ২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে অনেক কৃষকের বীজতলা পরিপুষ্ট হয়ে উঠেছে। কেউ কেউ আবার আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কৃষকরা পাওয়ার টিলার দিয়ে জমি চাষ করছেন, কেউ সেচ দিচ্ছেন, কেউ জমির আইল বাঁধছেন, বীজতলা সমান করছেন, কেউবা বীজ বপন করছেন। তবে সম্প্রতি তীব্র শীতের কারণে কৃষকের কপালে কিছুটা চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। গুমাইবিলে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার বলেন, বীজতলা ইতোমধ্যে উঠে গেছে। বীজতলা নষ্ট হওয়ার আর কোনো আশঙ্কা নেই। ইতিমধ্যে বোরো আবাদও শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারি প্রণোদনা পাওয়া হাইব্রিড জাতের আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েছে কৃষক। কারণ এই জাতের ধানে ফলন বেশি। প্রণোদনা বীজের বাইরেও কৃষকরা নিজ উদ্যোগে এই বীজ সংগ্রহ করে বীজতলা করেছেন। এছাড়া ব্রি ধান ২৮, ২৯, ৫৮, ৮৯, ৯২, উচ্চ ফলনশীল উফশী জাতসহ বিভিন্ন দেশীয় জাতের বীজতলা তৈরি হয়েছে।
চন্দ্রঘোনা চারাবটতল এলাকার কৃষক রেজাউল করিম বলেন, চারা মোটামুটি উঠে গেছে। কৃষি অফিসারদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিরোধমূলক কিছু ব্যবস্থা নিয়েছি।
কাটাখালী এলাকার কৃষক মোকাররম মিয়া জানান, তিনি এবার ৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করবেন। এজন্য ডিসেম্বর থেকে বীজতলা করেছেন। ইতোমধ্যে ৩ হেক্টর জমিতে আবাদ করেছেন। বাকিগুলোতে আবাদ প্রক্রিয়া চলছে। বীজতলা যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী তারা কাজ করছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রুহুল আমিন বলেন, এবার যথাসময়ে বোরো ধানের বীজতলা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বীজতলার চারা পরিপুষ্ট হয়ে গেছে। তাই তীব্র শীতেও এই নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। তারপরও কৃষকদের বীজতলা রক্ষায় উপ–সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে থেকে তাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। গেল মৌসুমে রাঙ্গুনিয়ায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা ছাড়াই কৃষকরা বোরো আবাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আশা করি এবারও ভালো ফলন হবে।












