স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণে সহায়তা ও বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থায় বাংলাদেশকে যুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো–আইওয়ালা। সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই প্রতিশ্রুতি দেন বলে গতকাল বাসসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বাংলাদেশের আসন্ন এলডিসি উত্তরণ বিষয়ে এনগোজি বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা এই প্রক্রিয়া মসৃণ করার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। খবর বিডিনিউজের।
মুহাম্মদ ইউনূসকে তিনি বলেন, আমরা কিছু নীতি কাঠামো করব এবং আপনাদের সঙ্গে কাজ করব। ডব্লিউটিও প্রধান বলেন, তিনি বৈশ্বিক শীর্ষস্থানীয় তিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং বৈশ্বিক লজিস্টিক ব্যবস্থা বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে তাদের সরবরাহ কাঠামো বাংলাদেশে স্থানান্তরে উৎসাহিত করার চেষ্টা করছেন। আমি তাদের বলেছি, কেন বাংলাদেশে আপনারা যুক্ত হবেন না? আমরা বাংলাদেশে আরও সরবরাহ কাঠামো যুক্ত করার জন্য চাপ দিচ্ছি।
এনগোজির নেতৃত্বের প্রশংসা করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বৈশ্বিক বাণিজ্য আলোচনায় তিনি নতুন গতিশীলতা এনেছেন। ইউনূস বলেন, দুর্নীতি ও স্বৈরশাসকের ঘনিষ্ঠ অলিগার্কদের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়েছিল। সেখান থেকে বেরিয়ে এসে পরিবেশ এখন ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, লাখ লাখ তরুণ জনগোষ্ঠী ও প্রযুক্তি–সচেতন দক্ষ কর্মী থাকায় বাংলাদেশ সহজেই বৃহৎ উৎপাদনকেন্দ্রগুলোর একটি হতে পারে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার এনেছে এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে চট্টগ্রাম বন্দরের সেবা সহজ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করেছি। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের বিষয়ে ইউনূস বলেন, দুর্নীতি হয়েছে, এমন সব আন্তর্জাতিক চুক্তির সঙ্গে তৎকালীন ক্ষমতাসীন পরিবারের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা যুক্ত ছিলেন।
এনগোজি বলেন, তিনি জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণ করা তরুণ বিক্ষোভকারীদের চেতনায় মুগ্ধ হয়েছেন। তিনি বলেন, তারা সবচেয়ে শক্তিশালী বার্তাগুলো পাঠিয়ে এক অভূতপূর্ব উদাহরণ স্থাপন করেছে। বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে ডব্লিউটিও প্রধান বলেন, আপনি স্থিতিশীলতার এক প্রতিমূর্তি। আপনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা ও শান্তি ফিরে এসেছে।
বৈঠকে এনগোজি বাংলাদেশকে মৎস্য ভর্তুকি চুক্তি অনুমোদনের আহ্বান জানান। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখবে। ডব্লিউটিও মহাপরিচালক মৎস্য–২ চুক্তি অনুমোদনের অনুরোধ করলে জেনেভায় জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি তারেক আরিফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ এই প্রক্রিয়ায় গঠনমূলক আলোচনায় যুক্ত রয়েছে।