বৈশাখী উৎসব বাঙালি ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক

শ্রীধর দত্ত | বৃহস্পতিবার , ২১ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ

সপ্রাচীন কাল থেকে বাংলা নববর্ষের শুরুতে বৈশাখী উৎসবের মেলা-খেলা উদযাপিত হয়ে আসছে। বৈশাখী উৎসব অসাম্প্রদায়িক বাঙালি জাতির প্রাণের মিলনমেলা। বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য মেলায় খেলায় ফুটে উঠে। ছোটবেলায় ঠাকুরমার কাছ থেকে শুনেছিলাম ঠেগর পুনির মেলা থেকে ঘরে ব্যবহৃত নিত্য প্রয়োজনীয় সব জিনিস নিয়ে আসতো এমনকি বড় বড় মাছ লাক্ষা শুটকি পাওয়া যেতো।

সময়ের পরিবর্তনে মেলাগুলো ছোট হয়ে গেছে। সময়ের পরিবর্তনে মেলার জৌলুস হারিয়ে গেছে। কারণ আপনি বাড়ি থেকে বের হলে রাস্তার মোড়ে পাবেন দোকান আর কিছু দূরে গেলে বড়বাজারে মিলবে মার্কেট। তবে স্বল্প পরিসরে হলেও টেগর পুনি এবং মহিরা ক্ষেত্রপাল মেলার ঐতিহ্য এখনও ধরে রেখেছে। পূর্বে গ্রামের বড় হাট, খোলা মাঠ, বটতলা, খোলা জায়গায়, নদীর ধারে বৈশাখী মেলা বসতো।

একসময় শিশুদের জন্য নগরদোলা, সার্কাস, পুতুল নাচ, বাইস্কোপ মেলার প্রধান আকর্ষণ ছিল। গ্রাম্য মেলায় আরো আকর্ষণ ছিলো ষাঁড়ের লড়াই, লাঠিখেলা, কুস্তিখেলা এবং যাত্রাপালা। এবং জারি-সারি কবিগানের আসর বসতো। উত্তরাঞ্চলে এখনো কিছু কিছু জায়গায় বিদ্যমান তবে আমাদের চট্টগ্রামে তাা হারিয়ে গেছে। দোকানিরা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসতেন। এছাড়া মুড়ি-মুড়কি, পিঠা পুলি, তিলুয়া, বাতাসা, হাওয়াই মিঠাই, নাড়ু, জিলাপি মুখরোচক নানা রকমের খাবার। কাঠ ও বাঁশের তৈরি চেয়ার, টেবিল, খাট, পিরি, মোড়া পাওয়া যায়।

মাটির তৈরি ব্যাংক পুতুল হরিণ ঘোড়া হাতিসহ নানা খেলনা গৃহস্থালী পণ্য তৈজসপত্র ফুলের টপ ইত্যাদি। স্থানীয় কৃষিজাত দ্রব্য কুটিরশিল্প, হস্তশিল্প, নকশিখাতা, হাতপাখা, কাচের চুড়ি, রঙের ফিতা, তাঁতের শাড়ি ইত্যাদি। চট্টগ্রাম ঐতিহ্যবাহী লালদিঘির ময়দানে জব্বারের বলি খেলা এবং তাঁর চারিপাশে বিস্তৃত বৈশাখী মেলার উৎসব এক মহা আনন্দের মিলন মেলা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগোয়ালপাড়া এলাকায় চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির জন্য হাহাকার চলছে
পরবর্তী নিবন্ধটিকে থাকুক মৃৎ শিল্প, স্বাবলম্বী হোক শিল্পীরা