শাহ আলম নামের টেকনাফের এক ইয়াবা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে দুদক। তিনি টেকনাফের পুরান পল্লান পাড়া এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে।
চার্জশিটে বলা হয়েছে, শাহ আলমের বৈধ কোনো ব্যবসা নেই। অথচ তিনি প্রায় অর্ধ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। যা তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসংগতিপূর্ণ। সাড়ে ২৪ লাখ টাকা ব্যয় করে বাড়ি নির্মাণ করলেও এ সংক্রান্ত কোনো তথ্যই তিনি তার আয়কর নথিতে উল্লেখ করেননি। সম্প্রতি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম–২ এর উপসহকারী পরিচালক ও বর্তমানে কক্সবাজারে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন এই চার্জশিট দাখিল করেন। চট্টগ্রাম আদালতে থাকা দুদকের জিআরও আব্দুল লতিফ আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, দাখিলকৃত চার্জশিটটি শুনানির জন্য ১২ মার্চ দিন ধার্য রয়েছে। সেদিন আদালত শাহ আলমকে হাজিরের নির্দেশ দিবেন। নির্দেশনা অনুযায়ী হাজির না হলে অনুপস্থিতি ছাড়াই তার বিরুদ্ধে চার্জগঠন করবেন আদালত। এটাই নিয়ম। আদালতসূত্র জানায়, শাহ আলম টেকনাফে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মধ্যে অন্যতম। একসাথে আত্মসমর্পণ করা ১০২জন মাদক ব্যবসায়ীর মধ্যে এই শাহ আলমও ছিলেন। কারাগারে থেকে জামিনে বেরিয়ে পলাতক হয়েছেন।
আদালতসূত্র জানায়, ইয়াবা ব্যবসার মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন শাহ আলম, এই সংক্রান্ত একটি অভিযোগ অনুসন্ধান করে দুদক। এতে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতাও মিলে। এ জন্য তার সম্পদ বিবরণী দাখিলের জন্য সুপারিশ করে অনুসন্ধানকারী টিম। সুপারিশ অনুযায়ী শাহ আলমের নামে সম্পদ বিররণী দাখিলের আদেশ জারি করা হয়। কঙবাজার কারাগারে থাকা অবস্থায় শাহ আলম সম্পদ বিবরণী ফর্মে স্বাক্ষরও করেন। কিন্তু নির্ধারিত ১৪ দিন পেরিয়ে গেলেও শাহ আলম সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি।
আদালত সূত্র আরো জানায়, তদন্তকালে দেখা যায়, আসামি শাহ আলম প্রায় ২৫ লাখ টাকা খরচ করে বাড়ি নির্মাণ করলে সে তথ্য তার আয়কর নথিতে পাওয়া যায় নি। এছাড়াও তার নামে অন্যান্য জমি–জমা থাকলেও আয়কর নথিতে সেসব তথ্য প্রদর্শন করেননি। চার্জশিটে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো উল্লেখ করেন, শাহ আলমের কোনো বৈধ ব্যবসার রেকর্ডপত্র পাওয়া যায়নি। এস কে এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি ট্রেড লাইসেন্স ও ফার্নিসার্স মার্ট নামের একটি আসবাসপত্র ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স তার নামে পাওয়া গেলেও সেখান থেকে সামান্য কিছু অর্থ আয়ের তথ্য পাওয়া গেছে। চার্জশিটে বলা হয়, শাহ আলম অসৎ উদ্দেশ্যে দুদক থেকে ইস্যুকৃত সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ গ্রহণ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উক্ত সম্পদ বিবরণী ফরম পূরণপূর্বক তা দাখিল করেননি। পাশাপাশি তিনি প্রায় অর্ধ কোটি টাকার সম্পদ জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর দুদক কর্মকর্তা মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে শাহ আলমের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী দাখিল না করায় মামলাটি দায়ের করেন।