বে টার্মিনাল নির্মাণ করতে চায় সৌদি কোম্পানি

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২২ অক্টোবর, ২০২০ at ৯:০১ পূর্বাহ্ণ

পেট্রো ডলারের বড় বিনিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশে আসার আগ্রহ দেখিয়েছে সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল (আরএসজিটি) লিমিটেড। বিশ্বের নানা দেশে বন্দরসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে হাজার হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগকারী আরএসজিটি চট্টগ্রামে বে টার্মিনাল নির্মাণের পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের পানগাঁও টার্মিনাল পরিচালনার আগ্রহ দেখাচ্ছে। পোর্ট অপারেটর এন্ড ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপ হিসেবে বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানটির নীতি নির্ধারক পর্যায়ের শীর্ষ একজন কর্মকর্তা বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। ওই কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল আজ সকালে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সাথেও বৈঠক করবে।
চট্টগ্রাম বন্দরের পাঁচ গুণেরও বেশি বড় এলাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠাতব্য বে টার্মিনাল নির্মাণসহ অপারেশনের নানা কর্মকাণ্ডে নিজেদের আগ্রহের জানান দিয়ে দেশের শিপিং সেক্টরে আলোচনায় আসে সৌদি আরবের জেদ্দার রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল লিমিটেড। বহুদিন ধরে তাদের নাম শোনা যাচ্ছিল। আরএসজিটি ছাড়াও বে টার্মিনালের ব্যাপারে বিশ্বখ্যাত আরো কয়েকটি প্রতিষ্ঠান আগ্রহ দেখিয়েছে। সেগুলো হল- সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটি (পিএসএ), সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই পোর্ট ওয়ার্ল্ড (ডিপি ওয়ার্ল্ড), ভারতের আদানি পোর্ট, সাংহাই পোর্টসহ শহরের নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান চায়না মার্চেন্টস স্পোর্ট হোল্ডিং কোম্পানি লিমিটেড এবং দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই গ্রুপ। বহুল কাঙ্ক্ষিত এই বে টার্মিনালের নির্মাণ কার্যক্রম কবে নাগাদ শুরু হবে বা এতে বিনিয়োগে আর কত সময় লাগবে তা নিয়ে নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না কেউ। এই অবস্থায় ঢাকার পানগাঁও টার্মিনাল দিয়েই চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকাণ্ডে জড়াতে চায় রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল লিমিটেড। তারা ঢাকার পানগাঁও টার্মিনাল পরিচালনায় দীর্ঘমেয়াদী দায়িত্ব নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ প্রক্রিয়ায় তারা বে টার্মিনালেও কাজ করতে চায়। একই প্রক্রিয়ায় তারা পানগাঁও টার্মিনালে বিনিয়োগ করতেও আগ্রহী। এই টার্মিনালে বিনিয়োগ করে তারা অভ্যন্তরীণ নৌ রুটে কন্টেনার পরিবহনে গতিশীলতা তৈরি করার আগ্রহ দেখিয়েছে। টার্মিনালটির আধুনিকায়নের পাশাপাশি কন্টেনার হ্যান্ডলিং এর প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহের কথাও বলেছ প্রতিষ্ঠানটি। পাশাপাশি পানগাঁও টার্মিনালেও বড় বিনিয়োগ করতে চায় তারা। এই টার্মিনালে ‘কী গ্যান্ট্রিক্রেন’সহ সব ধরনের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তারা নিজেদের অর্থায়নে ক্রয় ও স্থাপন করতে চায় বলে জানিয়েছে। তারা বলছে, প্রতিষ্ঠানটি নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত টার্মিনাল পরিচালনা করে পরবর্তীতে সবকিছু বন্দরকে বুঝিয়ে দিয়ে চলে যাবে। তারা পিপিপি পদ্ধতির আওতায় বিওটি (বিল্ড অপারেট এন্ড ট্রান্সফার) প্রক্রিয়ায় টার্মিনালটি পরিচালনা করতে চায় বলে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে জানিয়েছে।
আরএসজেটি’র সহযোগী পরিচালক (গ্লোবাল ইনভেস্টমেন্ট) হাসান আল তাহাত ১০ দিনের সফরে গত ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশে আসেন। ইতোমধ্যে তিনি ঢাকায় পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে বৈঠক করেছেন। তিনি ঢাকায় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপির সাথে সাক্ষাৎ করেছেন। বৈঠক করেছেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষের সাথেও। আজ সকালে তিনি চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের সাথে বৈঠক করবেন। ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে হাসান আল তাহাত বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ব্যাপারে কথা বলেন। গতকাল নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল একটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করে জানিয়েছে, সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে সৌদি আরবের এই আগ্রহকে বেশ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরেলের ১৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
পরবর্তী নিবন্ধসাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী গ্রেপ্তার