বেসরকারি হাসপাতালেও যাচ্ছে ১০ লাখ সরকারি টিকা : স্বাস্থ্যমন্ত্রী

কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধন আপাতত বন্ধ

আজাদী ডেস্ক | শুক্রবার , ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৭:৫৩ পূর্বাহ্ণ

দেশের মানুষকে দেওয়ার জন্য সরকার করোনাভাইরাসের যে টিকা আনছে, তার একটি অংশ বেসরকারি হাসপাতালেও দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ‘সামনের কাতারের’ কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ-হাসপাতালকে ১০ লাখ টিকা দেওয়া হবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন। তার ভাষ্য মতে, বেসরকারি হাসপাতালগুলো এই টিকা সরকারের কাছ থেকে কিনে নেবে। পরে তারা টিকা গ্রহীতাদের কাছে তা বিক্রি করবে। তবে সরকারিভাবে যে টিকা বিনামূল্যে পাচ্ছে জনগণ, সেই টিকা বেসরকারি হাসপাতাল থেকে নিতে গেলে কত টাকা খরচ করতে হবে- সেই সিদ্ধান্ত এখনও জানা যায়নি। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছে কি না তার পরীক্ষার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে যেখানে ১০০-৩০০ টাকা দিতে হয়, সেখানে বেসরকারি হাসপাতালে লাগে সাড়ে তিন হাজার টাকা। এখন করোনাভাইরাসের কিছু টিকাও সেভাবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা জানালেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলো সরকারের কাছ থেকে টিকা কিনে নেবে। এ বিষয়টি আমরা প্রসেস করছি। আমরা প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়েছি। তাদের আমরা বেশি দেব না। ওরা চাচ্ছে তাই অল্প ভ্যাকসিন দেব। তাতে আমাদেরও লোড কম হবে। কিছু লোক বেসরকারি হাসপাতালে যাবেন।
জাহিদ মালেক বলেন, এসব টিকা শুধু ‘ভালো মানের’ হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজগুলোকে দেওয়া হবে। সেগুলো আমরা অনুমোদন করে দেব। তারা শুধু ভ্যাকসিন প্রয়োগ করবে। ভালো প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ বলেন আর ভালো হাসপাতাল বলেন, তারাই শুধু এই ভ্যাকসিন পাবে।
এছাড়া করোনাভাইরাসের টিকার নিবন্ধন কেন্দ্রে গিয়ে নেয়ার সুবিধা আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। গতকাল ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, নিবন্ধন না করেও অনেকে টিকা নিতে আসায় বিভিন্ন কেন্দ্রে অতিরিক্ত ভিড় তৈরি হচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ, বিশেষ করে যাদের স্মার্টফোন নেই, তাদের জন্য টিকাদান কেন্দ্রে এসে নিবন্ধনের সুযোগ রেখেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। মন্ত্রী জানান, এ পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি মানুষ টিকা নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন। তিন লাখের বেশি মানুষ ইতোমধ্যে টিকা নিয়েছেন। কিন্তু টিকাদান কার্যক্রম ঠিকভাবে চালাতেই আপাতত ওই সুবিধা বন্ধের সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছেন। আমরা চাই সুষ্ঠুভাবে ভ্যাকসিন নেওয়া হোক। আমরা বিভিন্ন রকমের জায়গা তৈরি করে দিয়েছি। এই সুন্দর পরিবেশ আমরা তৈরি করেছি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে যারা অনস্পট রেজিস্ট্রেশন করছেন- তাদের সংখ্যাই বেশি। আর যারা রেজিস্ট্রেশন করছেন, তারাই ঢুকতে পারছেন না। বয়স্ক লোকেরা যাচ্ছে, তাদের কষ্ট হচ্ছে। যারা ভ্যাকসিন দিচ্ছে- ডাক্তার, নার্স তাদের কষ্ট হচ্ছে। আমরা এই পরিস্থিতি চলতে দিতে চাই না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রেজিস্ট্রেশন যেহেতু অনেক সাকসেসফুলি হচ্ছে, ১০ লাখের বেশি হয়ে গেছে, এ কারণে আমরা এখন অনস্পট রেজিস্ট্রেশন আর করব না। এখন থেকে যারা নিবন্ধন করে কেন্দ্রে যাবেন, শুধু তাদেরই টিকা দেওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যদি টিকাদান কেন্দ্রে নিবন্ধনের প্রয়োজন পড়ে, তখন আবার জানানো হবে। টিকা নিয়ে অনেক ধরনের সমালোচনা হলেও মানুষের দ্বিধা কেটে গেছে এবং টিকা নেওয়ার আগ্রহ বেড়েছে বলে মন্তব্য করেন জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, যারা করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন তারাই এখন আগে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন। করোনার ভ্যাকসিন প্রসঙ্গ উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বিষযয়েও অনেক সমালোচনা করা হয়েছে। অনেকে বলেছেন ভ্যাকসিন আসবেই না বাংলাদেশে, ভ্যাকসিন আসলেও কার্যকরী হবে না। যারা সমালোচনা করেছে এখন তারাই আগে ভ্যাকসিন নিচ্ছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমৃত্যুশূন্য ১৭তম দিনে চট্টগ্রামে নতুন শনাক্ত ৬৬ জন
পরবর্তী নিবন্ধশপথ নিলেন চসিকের মেয়র রেজাউলসহ কাউন্সিলররা