বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া ১০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত

অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিয়ে ‘মাস্তানি’ সহ্য করা হবে না : মেয়র

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৯ জুন, ২০২৫ at ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্সের নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০১৮ সালের ভাড়া থেকে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত হয়। তালিকা অনুযায়ী ভাড়া নিচ্ছে কিনা, তা চমেকের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা পর্যবেক্ষণ করবেন বলে সভায় জানানো হয়। গতকাল দুপুরে চমেক হাসপাতালের মিলনায়তনে ‘চমেক হাসপাতালের রোগী ও লাশ পরিবহন নীতিমালায় বর্ণিত অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া পুনঃমূল্যায়নপূর্বক যৌক্তিককরণ’ সভায় এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সভায় চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিআরটিএ ও অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমিতির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ১০ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সভাটির আয়োজন করে।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চটগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রোগী ও লাশ পরিবহনে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিয়ে কোনো ‘মাস্তানি’ সহ্য করা হবে না। আমার গাড়িতেই নিতে হবে। ওই গাড়ি কেন এসেছে? তাকে মারো, তাকে ঢুকতে দিব না, তা হবে না। যেখানে রোগী কমফোর্ট ফিল করবে সেখানে যাবে। এ ব্যপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে কোনো অজুহাত শুনব না। কোনো ধরনের অনিয়মশোষণ সহ্য করব না। এটার বিরুদ্ধে যতদূর যেতে হয় যেতে রাজি আছি। কোনো ছাড় দেব না।

তিনি আরো বলেন, অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে সমস্যা দীর্ঘদিনের। যারা অ্যাম্বুলেন্স চালায় এদের সাথে ওয়ার্ড বয়দের যোগাযোগ আছে। যখন কোনো রোগী মারা যাবে দেখবেন, ওয়ার্ড বয় তৎপর হয়ে যাবে। অনেক চালক ও ওয়ার্ড বয়রা মিলে কাজটা করে ফেলে। সেটা হয়ত মালিক জানতে পারে না। আমরা যদি ওখানে সংস্কার করতে না পারি তাহলে হবে না। ওই জায়গা থেকে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ে।

ডা. শাহাদাত বলেন, আমরা যদি এখনই সংস্কার না করি, তবে এই দুর্নীতি হাসপাতালের প্রতিটি শিরায়উপশিরায় ছড়িয়ে পড়বে। আমি পরিষ্কার করে বলছিকোনো অনিয়ম, শোষণ বা দুর্নীতি আমরা প্রশ্রয় দেব না। যত দূর যেতে হয়, আমি প্রস্তুত আছি। মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলবে না।

সভাপতির বক্তব্যে চমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন বলেন, কোন অ্যাম্বুলেন্সে কে যাবেনা যাবে, এটি অ্যাম্বুলেন্স সমিতি নির্ধারণ করার কে? তারা এটি করতে পারে না। রোগীর স্বজনেরা যার কাছ থেকে ইচ্ছা তার কাছ থেকে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে যাবে। এখানে অ্যাম্বুলেন্স চালক মালিক সমিতি এটি নির্ধারণ করতে পারে না। তাদেরকে সেই ক্ষমতা কেউ দেয়নি। এই জিনিসটা আমাাদেরকে মাথায় রাখতে হবে।

চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, রোগী ছাড়াও অ্যাম্বুলেন্স চালকরা সাইরেন বাজায়। আমরা অনেক অভিযোগ পেয়ে থাকি। বিষয়টি সমিতির লোকদের মাথায় রাখা উচিত।

সভায় মেয়র সিটি মেয়র গাড়ির ফিটনেস, পরিবহন কোম্পানির তথ্য, মালিক ও চালকের নামফোন নম্বর, গাড়িতে রোগী ও লাশ পরিবহন নীতিমালা ও ভাড়ার হার বই সংরক্ষণ, রোগীর ও যাত্রীদের সিটের মান এবং চালক উপযোগী কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে বলেও তুলে ধরেন।

চট্টগ্রাম অ্যাম্বুলেন্স মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ বলেন, আমরা সর্বশেষ বলেছিলাম আগের চেয়ে ৩০ শতাংশ বাড়িয়ে ভাড়া নির্ধারণের জন্য। কিন্তু সেটা ১০ শতাংশ বাড়িয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কখন থেকে এবং কতদিনের জন্য এই ভাড়া কার্যকর হবে তা মেয়র মহোদয় চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের পর ঠিক হবে। আমরা সভার সিদ্ধান্তে সম্মতি দিয়েছি। কিন্তু আমাদের সমিতির সদস্যদের সাথেও এখন বসতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভাতের হোটেলে আটকে রেখে তিন শিশুকে কাজে বাধ্য, পরে উদ্ধার
পরবর্তী নিবন্ধনিউমুরিং এলাকায় শেয়ার ব্যবসায়ীকে খুন, দুই জনের মৃত্যুদণ্ড