বেনাপোলে ৩৬ ট্রাক পোশাক, বুড়িমারীতে ১৩ ট্রাক খাদ্যপণ্য আটকা

ভারতের আমদানি নিষেধাজ্ঞা

| সোমবার , ১৯ মে, ২০২৫ at ৮:০৫ পূর্বাহ্ণ

ভারত সরকারের আমদানি নিষেধাজ্ঞার পর যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে তৈরি পোশাকের ৩৬টি ট্রাক আটকা পড়েছে। পেট্রাপোল কাস্টমস কর্তৃপক্ষের গেট পাশ অনুমতি না পাওয়ায় পণ্য বোঝাই ট্রাকগুলো ভারতে যেতে পারেনি বলে বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান। এছাড়া লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে আটকে গেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ১৩ ট্রাক খাদ্যপণ্য। খবর বিডিনিউজের।

ভারত সরকারের আমদানি নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে জানতে চাইলে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবির তরফদার বলেন, এ সংক্রান্ত কোনো চিঠি আমরা পাইনি। পত্রপত্রিকায় দেখেছি। বেনাপোল বন্দর দিয়ে শনিবার পর্যন্ত সব পণ্য রপ্তানি হয়েছে। তবে রোববার সকাল থেকে অন্যান্য পণ্য রপ্তানি হলেও প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পোশাক জাতীয় কোনো পণ্য রপ্তানি হয়নি। বিভিন্নভাবে জানতে পেরেছি ৩০ থেকে ৩৫ ট্রাক পণ্য এখানে আটকে আছে।

বাংলাদেশ থেকে স্থলবন্দর দিয়ে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পোশাকসহ প্রায় সাত ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারত সরকার।

বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকটি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ভারত। যেসব পণ্যের এলসি/টিটি এরই মধ্যে হয়ে গেছে সেসব পণ্য যাতে আমদানি করা যায় তার জন্য কাস্টমসে আলোচনা চলছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, স্থলপথে পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞার কারণে কার্যত ভারতের সঙ্গে রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে। আমদানিকারকরা বেনাপোল ও সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে থাকে কলকাতায়। সেটা বন্ধ হয়ে গেল। নৌপথে পণ্য পরিবহন করা এসব রপ্তানিকারকদের পক্ষে সম্ভব না। এতে খরচের পাশাপাশি সময়ের কারণে সেটা তারা পারবেন না।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, ভারত সরকার স্থলবন্দর দিয়ে গার্মেন্টস সামগ্রী আমদানি নিষেধাজ্ঞা জারি করায় বিপাকে পড়েছে ব্যবসায়ীরা। স্থলপথে এসব পণ্য রপ্তানিতে খরচ অনেক কম হতো কিন্তু সমুদ্র ও বিমান পথে পণ্য রপ্তানিতে খরচ অনেক বেশি হবে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, বছরে ১০ থেকে ১৮ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের পণ্য রপ্তানি হয় ভারতে। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় বেশিরভাগ আমদানিকারকেরা বেনাপোল বন্দর ব্যবহারে আগ্রহী। এ পথে রফতানি পণ্যের মধ্যে রয়েছে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যপণ্য, পাট, পাটের তৈরি পণ্য, গার্মেন্টস, তৈরি পোশাক, কেমিকেল, বসুন্ধরা টিসু, মেলামাইন, মাছ উল্লেখ্যযোগ্য।

বুড়িমারীতে আটকা ১৩ ট্রাক খাদ্যপণ্য : ভারতের আমদানি বিধিনিষেধের কারণে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দরে আটকে গেছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের ১৩ ট্রাক খাদ্যপণ্য। বুড়িমারী স্থলবন্দর ট্রেড সিন্ডিকেটের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট প্রতিনিধি রেফায়েত হোসেন গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, এখানে শনিবার রাতে প্রাণ আরএফএল গ্রুপের কয়েকটি ট্রাক আমাদের মাধ্যমে বন্দরে আসে। রোববার সকালে পণ্য রপ্তানির কথা থাকলেও ভারতের পক্ষ থেকে আমদানি নিষেধ থাকায় ক্লিয়ারেন্স পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, ১১টি ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের জুস, একটি ট্রাকে পটেটো ক্রেকার্স এবং আরেকটি ট্রাকে নুডলস জাতীয় খাদ্যপণ্য রয়েছে।

বুড়িমারী স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, রোববার বিকাল ৫টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত বন্দরে ২৪০টি ট্রাকে বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্টোন বোল্ডার, ক্র্যাশ স্টোন, এলাচ, ভুটানি জুস ও প্যারাফিন। তিনি বলেন, আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। তবে খাদ্যপণ্য রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজুলাইয়ের মধ্যে চবিতে চালু হচ্ছে ই-কার সার্ভিস
পরবর্তী নিবন্ধস্থলবাণিজ্যে নতুন নিষেধাজ্ঞায় ভারতের ব্যবসায়ীদেরই ক্ষতি হবে : বাণিজ্য উপদেষ্টা