সাবেক আইজিপি এবং সাবেক সেনাপ্রধান দলের ‘লোক নয়’ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জ্যেষ্ঠতা এবং মেধা যাচাইয়ে তারা যে যার জায়গায় প্রধান হয়েছিলেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস এবং ২৩ জুন দলের প্লাটিনাম জয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত প্রতিনিধি সভায় কাদের কথা বলছিলেন। এ সময়ে আলোচনায় থাকা পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ এবং সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের অনিয়ম–দুর্নীতির বিষয়ে কথা বলছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। খবর বিডিনিউজের।
তিনি বলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এবং সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ যদি ভেতরে ভেতরে কোনো অপকর্ম করেন এবং সেটা যখন সরকারের কাছে আসে তখন তাদের বিচার করার সৎ সাহস শেখ হাসিনার আছে। তারা আওয়ামী লীগের নন। আওয়ামী লীগ শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে কাউকে পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব বা প্রশাসনের বড় পদে কাউকে বসায়নি বলেও জানান কাদের।
আটজনকে পাশ কাটিয়ে ৯ নম্বর ব্যক্তি মঈন আহমেদকে সেনাপ্রধান করেছে, কে করেছে? বেগম খালেদা জিয়া। আশরাফুল, রকিবুল হুদা, কোহিনূর কার সৃষ্টি? মির্জা ফখরুল অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছেন। ভুলে গেছেন, আপনার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অস্ত্র চোরাচালান, মানি লন্ডারিংয়ের মামলায়, দুর্নীতির মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশে বিদেশে সর্বত্রই একজন সৎ পলিটিশিয়ান হিসেবে পরিচিত। তার সততা নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই।
বিএনপি শাসনামলের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনাদের (বিএনপি) সময় কেউ শাস্তি পায়নি। আপনাদের দলের নেতা নিজেই দুর্নীতিবাজ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে লক্ষ্য করেছি, বিরোধীদল বিএনপি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলছে, অর্থপাচারের বিরুদ্ধে কথা বলছে। তাদের দলের প্রধান দুর্নীতির অভিযোগে সাজা ভোগ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর উদারতায় উনি এখন বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বাংলাদেশের নির্বাচনি ইতিহাসে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে ‘সর্বোচ্চ শান্তিপূর্ণ’ দাবি করে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, উপজেলা নির্বাচন নিয়েও এত কথা, জনগণ নাকি ভোট দিতে যায় না। অথচ প্রথম ধাপে ৩৬, দ্বিতীয় ধাপে ৩৭ ও তৃতীয় ধাপে ৩৮ শতাংশেরও বেশি ভোটার উপস্থিতি ছিল। জাতীয় নির্বাচনেও ৪২ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি ছিল। এখানে কোনো প্রাণহানি হয়নি।
টিআইবি ও সুজন’র সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে টিআইবি একটা আছে, সুজন আছে, সুজন না কুজন জানি না। ফখরুল, গয়েশ্বর যে সুরে কথা বলে তারাও একই সুরে কথা বলে। আজকে মানুষের প্রশ্ন, টিআইবি, সুজন কি বিএনপির ‘বি’ টিম? যে সুরে কথা বলে, কোনো পার্থক্য না, একই সুরে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে। নেতাকর্মীদের কারো কোনো অসুবিধা থাকলে তা দলকে জানানোর কথা বলেছেন কাদের।
হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দলের বদনাম করে কেউ কোনো অপকর্ম করবেন না। সত্য সত্যই। বাইরে থেকে বেনজীরকে আমরা যেভাবে দেখেছি, তিনি যে আরেক বেনজীর ভিতর থেকে, সেটা তো এখন সত্য হয়ে দেখা দিচ্ছে। একজন মানুষের চলতে ফিরতে কত লাগে? দলের নেতা যদি দলের কর্মীদের কাছে টাকা–পয়সা চায় এটা খুব লজ্জার বিষয়।
প্রতিনিধি সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সভা সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি।