পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের পরিবারের মালিকানায় থাকা গুলশানের অভিজাত এলাকার চারটি ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়ার পরিকল্পনা করছে দুর্নীতি দমন কমিশন। এই ভাড়ার টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তা।
গতকাল সোমবার দুদকের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ইউনিটের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদের নেতৃত্বে একটি দল গুলশান–১ এর ১২৬ নম্বর সড়কের এক নম্বর বাড়ি র্যাংকন আইকন টাওয়ারের ফ্ল্যাট চারটি বুঝে নেয়। তিনি বলেন, আদালত যেহেতু আমাদের রিসিভার নিয়োগ দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী, ওই ফ্ল্যাটের সব মালামাল বুঝে নিলাম। চারটি ফ্ল্যাটের একটি ডুপ্লেক্সের মত করে তৈরি করা জানিয়ে তিনি বলেন, ওইসব ফ্ল্যাটে যা যা পাওয়া গেছে সকল জিনিসপত্রের ইভেনটরি করেছি, সেই তালিকা কমিশনে উপস্থাপন করা হবে। খবর বিডিনিউজের।
এই ফ্ল্যাট নিয়ে দুদক কী করবে–এই প্রশ্নে মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, রিসিভার নিয়োগ করা হয় জব্দ সম্পত্তির সঠিক ব্যবস্থাপনা করার জন্য। যদি সেখান থেকে অর্থ আয়ের সুযোগ থাকে তা চালু রাখা এবং রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়া। আমরা চেষ্টা করব যদি ওইসব ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়া যায় তার ব্যবস্থা করতে এবং সেই অনুযায়ী টাকা রাষ্ট্রের কোষাগারে জমা দেয়া হবে। গত ২৭ জুন আদালতের নির্দেশে দুদককে রিসিভার নিয়োগ দেওয়া হয়।
র্যাংকন আইকন টাওয়ার ১৯ দশমিক ৭৫ কাঠা জমির ওপর তৈরি ১৫ তলা একটি ভবন। এতে রয়েছে ২৫টি অ্যাপার্টমেন্ট। এর দুটি বেজমেন্ট, ৩৭টি গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা আছে। অবসরে যাওয়ার ৬ মাসের মধ্যেই ২০২৩ সালের ৫ মার্চ একসঙ্গে চারটি ফ্ল্যাট কেনে বেনজীর পরিবার। এর দুটি ২ হাজার ২৪২ বর্গফুটের এবং বাকি দুটি ২ হাজার ৩৫৩ বর্গপুট আয়তনের। এর মধ্যে তিনটি ফ্ল্যাট কেনা হয় বেনজীরের স্ত্রী জীশান মির্জার নামে। অপর ফ্ল্যাটটি বেনজীর আহমেদের ছোট মেয়ের হয়ে তিনি নিজের নামে কেনেন।
২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে অবসরে যাওয়া বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদের তথ্য প্রকাশের পর বিস্ময় তৈরি হয়েছে। বেশ কিছু জেলায় বহু একর জমি, একাধিক রিসোর্ট, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি ও ফ্ল্যাট আছে পরিবারের সদস্যদের নামে। সম্পদের তথ্য প্রকাশ হতে থাকলে বেনজীর ফেসবুক লাইভে এসে দাবি করেছিলেন, তার অবৈধ কোনো সম্পদ নেই। কেউ প্রমাণ করতে পারলে সেটি তার নামে লিখে দেবেন। তবে সম্পদ অর্জনের বিষয়ে দুদকের তলবে বেনজীর ও তার পরিবারের সদস্যরা সাড়া দেননি, আদালতের আদেশে সেসব সম্পদ জব্দ আর ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ হওয়ার আগেই পরিবারের সদস্যরা দেশ ছেড়েছেন।