বেতন না পেয়ে সড়ক অবরোধ, চট্টগ্রাম ইপিজেডে উত্তেজনা

| সোমবার , ৭ জুলাই, ২০২৫ at ৬:৪৭ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রাম ইপিজেডে অবস্থিত গার্মেন্টস কারখানা থিয়ানিস অ্যাপারেলস লিমিটেডের শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে ফের আন্দোলনে নেমেছেন।

সোমবার (৭ জুলাই) সকাল ১০টা ৩৫ মিনিট থেকে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ জন শ্রমিক ফ্যাক্টরি বন্ধ থাকা সত্ত্বেও চট্টগ্রাম বেপজা জোন অফিসের সামনে অবস্থান নেন।

এ সময় তারা স্লোগান দেন, “বেতন চাই, বাঁচতে চাই”। দীর্ঘসময় অবস্থান কর্মসূচির পর দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে বেপজা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের জানান আগামী ১০ জুলাইয়ের মধ্যে বকেয়া বেতন পরিশোধ নিয়ে আলোচনা হবে। তবে শ্রমিকরা এই আশ্বাস মানতে না পেরে বেপজা চত্বর থেকে মিছিল করে চলে যান ফ্রি পোর্ট মোড়ে এবং সেখানে অবস্থান নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে করে আগ্রাবাদ থেকে পতেঙ্গা রোডে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

থিয়ানিস অ্যাপারেলসে কর্মরত শ্রমিকের সংখ্যা ৬৯৩ জন। তাদের অভিযোগ, কারখানা কর্তৃপক্ষ গত ২৬ জুন এবং ২ জুলাই বেতন দেওয়ার কথা বলেও দেননি। মে মাসের বেতন এখনও বাকি। জুন মাসও শেষ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় শ্রমিকেরা চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন।

এর আগে গত ১৬ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত একই দাবিতে তিন দিনব্যাপী অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছিলেন শ্রমিকেরা। তাতেও কোনও সুরাহা হয়নি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুস সোবহান বলেন, “কারখানাটি বর্তমানে আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও অন্যান্য দায়-দেনা পরিশোধ নিয়ে আমরা কাজ করছি। আমি বর্তমানে ঢাকা আছি বিস্তারিত জানাতে পরে জানাতে পারবো।

এদিকে জানা গেছে, বর্তমানে কারখানাটিতে কোনো ওয়ার্ক অর্ডার নেই। উৎপাদনও বন্ধ। বেপজা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ৩২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে, আর কাস্টমসের পাওনা প্রায় ৫৫ কোটি টাকা। শ্রমিকদের মে ও জুন মাসের বেতন বকেয়া অবস্থায় আছে। এসব বিবেচনায় বেপজা কর্তৃপক্ষ ফ্যাক্টরিটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বন্ধ ঘোষণা করেছে।

বকেয়া বেতন আদায়ের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বেপজা কর্তৃপক্ষ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ। তবে এখনো কোনো সমাধানে পৌঁছানো যায়নি।

পরিস্থিতি যেন আর অবনতির দিকে না যায় সেজন্য সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ইপিজেড থানা পুলিশ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও বেপজার নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। তাদের দাবি—বেপজা কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত হস্তক্ষেপ করে বকেয়া বেতন পরিশোধ নিশ্চিত করে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাঙামাটিতে দেড় কেজি গাঁজাসহ আটক ২
পরবর্তী নিবন্ধছেলের ফল জালিয়াতিতে জড়িয়ে সাময়িক বরখাস্ত চট্টগ্রামের সেই নারায়ণ