পুরুষদের তুলনায় নারী কর্মীদের বেতন কম দেওয়ার অভিযোগে সমপ্রতি ক্লাস–অ্যাকশন মামলার মুখে পড়েছে মার্কিন টেক জায়ান্ট অ্যাপল। কুপারটিনোভিত্তিক কোম্পানিটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, নিজেদের ক্যালিফোর্নিয়া দপ্তরের ১২ হাজারের বেশি নারী কর্মী পুরুষদের চেয়ে কম বেতন পাচ্ছেন। স্যান ফ্রানসিস্কোর এক আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন এক দশকের বেশি সময় ধরে অ্যাপলে কাজ করা দুই নারী কর্মী। খবর বিডিনিউজের।
মামলায় অভিযোগ, কোম্পানির প্রকৌশল, মার্কেটিং ও অ্যাপল কেয়ার বিভাগ নারীদের পরিকল্পিতভাবেই কম বেতন দিয়ে থাকে। এতে আরও বলা হয়, নারী কর্মীদের আগের চাকরির বেতন বা তাদের প্রত্যাশিত বেতনের ভিত্তিতে বেতন দেয় অ্যাপল, যার ফলে তাদের বেতন তুলনামূলক কম হয়।
আর অ্যাপলের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন পদ্ধতি, যা মূলত কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি ও বোনাস নির্ধারণ করে থাকে, সেক্ষেত্রেও নারীদের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হয় বলে উল্লেখ রয়েছে অভিযোগে। এর বিপরীতে অ্যাপল বলেছে, ২০১৭ সাল থেকে অ্যাপল লিঙ্গভিত্তিক বেতন সমতা অর্জন করেছে ও তা বজায় রেখেছে। পাশাপাশি প্রতি বছর একজন স্বাধীন তৃতীয় পক্ষ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কাজ করে আমরা কোম্পানির প্রত্যেক সদস্যের মোট বেতন–ভাতা যাচাই করি এমনকি প্রয়োজন পড়লে আমরা তা সমন্বয় করে থাকি যাতে আমরা বেতনের সমতা ধরে রাখতে পারি। বাদীপক্ষের আইনজীবী ইভ কারভান্তেজ বলেছেন, অ্যাপলের বিভিন্ন ব্যবসায়িক চর্চা প্রচলিত লিঙ্গভিত্তিক বেতনের ব্যবধান কেবল বাড়ায়ই না, সেটা টিকিয়েও রাখে। অ্যাপলের নারী কর্মীদের জন্য এটি একটি নো–উইন অবস্থা, যেখানে তাদের জয়ী হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই, বলেন তিনি। মামলায় বাদীপক্ষের প্রতিনিধিত্ব করছে আউটটেন অ্যান্ড গোল্ডেন, কোহেন মিলস্টেইন সেলার্স অ্যান্ড টোল এবং আল্টশুলার বার্জন নামের তিন আইনি সংগঠন, যারা এর আগেও এমন লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের অভিযোগ তুলে বিভিন্ন শীর্ষ কোম্পানিকে বড় ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করেছে। এর মধ্যে রয়েছে গত বছর ব্যাংকিং কোম্পানি গোল্ডম্যান স্যাকস–এর সঙ্গে সাড়ে ২১ কোটি ডলারের ফয়সালা ও ২০২২ সালে স্টার্লিং জুয়েলার্সের সঙ্গে সাড়ে ১৭ কোটি ডলারে মামলা নিষ্পত্তির মতো ঘটনাও। তবে, সে সময় কোম্পানিগুলো নিজেদের বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ নাকচ করেছিল বলে প্রতিবেদনে লিখেছে রয়টার্স।