বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে সারাদিন কালুরঘাট সেতুসহ আরাকান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বোয়ালখালী রিজেন্ট টেক্সটাইল নামে গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা। গতকাল সোমবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই আন্দোলন করেন তারা। এ সময় পুলিশের সাথে শ্রমিকদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পুলিশ-শ্রমিক ও পথচারীসহ প্রায় ২০ জন আহত হয়েছেন। এ সময় কালুরঘাট সেতুর উভয় পাড়ে সৃষ্ট সীমাহীন যানজটে আটকে অফিসগামী ও বাড়ি ফেরা মানুষদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত তিন মাস ধরে শ্রমিকদের বেতন ভাতা বন্ধ রয়েছে। একাধিকবার শ্রমিকরা আন্দোলন করেছে। অন্দোলনের মুখে মালিক পক্ষ গত বৃহস্পতিবার বেতন ভাতা পরিশোধ করার কথা থাকলেও রবিবার রাতে কারখানা কয়েক দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে হঠাৎ নোটিশ টাঙিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। আজ সোমবার (গতকাল) সকালে কাজে এসে বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেন শ্রমিকরা। সকাল থেকেই কারখানার সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন এসব শ্রমিকরা। এক পর্যায়ে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ শুরু করেন তারা। এতে কালুরঘাট সেতুর উভয় পাড়ে আটকা পড়ে শত-শত যানবাহন। মুহূর্তেই সেতুর দুপাড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। দুর্ভোগে পড়তে হয় নানা শ্রেণী পেশার মানুষকে। পায়ে হেঁটে সেতু পার হয়েও যানবাহন পায়নি অনেকেই। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের শান্ত করতে চাইলে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে শ্রমিকরা। এক পর্যায়ে লাঠিচার্জ শুরু করলে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে বোয়ালখালী থানার ওসি আবদুল করিমসহ বেশ কয়েকজন পুলিশ আহত হলে শুরু হয় উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। এসময় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেন এবং পথচারীরা দিকবিদিক ছুটতে থাকেন।
এতে পথচারী আবদুর রহিম (২৯) শ্রমিক রফিক (৩৫) আবু সহিদ রুবেল (২৭), লিজা (৩০), মো. মামুন (২২), লিজা আকতার (২০), রত্না দাশ, পুলিশ সদস্য মো. সজিব (২৭), গোলাম নবী (৫৪), মো. মহিউদ্দীন (২৭), বৃষ্টি বড়ুয়া (২৩), হাসান মাহমুদ রুবেল (২৬) ও যতীন্দ্র ত্রিপুরা (৩৫) আহত হন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বোয়ালখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেঙের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার সঞ্জয় সেন।
বোয়ালখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবদুল করিম রাতে দৈনিক আজাদীকে বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও মালিক এবং শ্রমিক প্রতিনিধিদের সাথে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত মোতাবেক মালিকপক্ষ ১২ এপ্রিল বেতন দিয়ে দেয়ার আশ্বাস দেন। পরে বিকেল ৫ টার দিকে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন শ্রমিকরা।