চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে সরবরাহ বাড়ায় কমছে চিনির দাম। গত এক সপ্তাহ আগে খাতুনগঞ্জের পাইকারী বাজারে মণপ্রতি (৩৭.৩২ কেজি) চিনি বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৩২০ টাকা। বর্তমানে প্রতি মণ চিনিতে দাম কমেছে ৭০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানি শুল্ক কমায় সরকার। এর প্রভাবে দাম কমছে। বর্তমানে বাজারে ব্যবসায়ীদের কাছে পর্যাপ্ত চিনির মজুদ রয়েছে। তবে ভোক্তারা বলছেন, সরকার যে হারে শুল্ক কমিয়েছে, সে হারে চিনির দাম কমেনি। ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময় নানা অজুহাতে দাম বৃদ্ধি করেন। চিনির বাজার স্থিতিশীল রাখতে হলে বাজারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা জরুরি।
গতকাল খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাইকারিতে প্রতি মণ চিনি বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ২৫০ টাকায়। গত এক সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার ৩২০ টাকায়। বর্তমানে পাইকারী হিসেবে প্রতি কেজি চিনির দাম পড়ছে ১১৩ টাকায়। সেই চিনি খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকায়।
নগরীর দামপাড়া এলাকার খুচরা ব্যবসায়ী মোহাম্মদ রানা বলেন, আমরা প্রতি কেজি চিনি ১২৫ টাকায় বিক্রি করছি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫ টাকা কমেছে। আমরা পাইকারী বাজার থেকে অল্প অল্প চিনি এনে বিক্রি করি।
জানা গেছে, খাতুনগঞ্জের বাজারে পণ্য বেচাকেনা ও লেনদেনে যুগ যুগ ধরে কিছু প্রথা চালু আছে। নিজেদের সুবিধার অনেক প্রথা আছে যেগুলো আইনগতভাবে স্বীকৃত নয়। এরমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) স্লিপ’। চিনি কিংবা অন্য কোনো পণ্য কেনাবেচায় ডিও বেচাকেনার মাধ্যমে বিভিন্ন আগাম লেনদেন হচ্ছে। দেখা যায়, পণ্য হাতে না পেলেও ওই স্লিপটিই বেচাকেনা হচ্ছে। কোনো কোম্পানি বাজারে আসার আগে নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্যের ডিও বিক্রি করে। যে দরে ডিও বিক্রি হয়, তার বাজার দর যদি বেড়ে যায়, তখন পণ্য ডেলিভারি দিতে তারা গড়িমসি করে। আবার দেখা যায়, কোম্পানির পণ্যের তুলনায় ডিও বিক্রিও হয় বেশি। এর ফলেও কোম্পানি বাজারে পণ্য ডেলিভারি দিতে পারে না। ফলে এসব পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আজাদীকে বলেন, চিনির সরবরাহ বাড়ার কারণে দামের ওপর প্রভাব পড়েছে। পাইকারী বাজারে চিনির কোনো ঘাটতি নেই। সাধারণত চিনির দাম বাড়লে সিন্ডিকেটের কারসাজির অভিযোগ উঠে। আসলে শুধু চিনি নয়, ভোগ্যপণ্যের দাম উঠানামা করে চাহিদা ও যোগানের ওপর। এখন সরবরাহ বেড়েছে তাই দাম কমছে।
মো. মোক্তার হোসেন নামের একজন ভোক্তা জানান, চিনির বাজার দীর্ঘ সময় ধরে চড়া। দাম উঠানামা করার পিছনে কয়েকটি শিল্প গ্রুপ জড়িত। যারা চিনি আমদানি করে পরিশোধন ও বিপণন করে। সরকার যদি নিয়মিত নজরদারি করে তবে চিনির দাম কখনো লাগামহীন হবে না।