বেড়েছে বিক্রি, জমজমাট হাট

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ১৫ জুন, ২০২৪ at ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ

বিবিরহাট পশুর বাজার। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা। লাল রঙে একটা ষাড়কে ঘিরে আছেন কয়েকজন। কাছে যেতেই শোনা গেল, গরুর মালিক বলছেন, ‘এক লাখ ৪০ হাজার টাকার কম পারা যাবে না’ তখন ক্রেতা বলে উঠলেন, ‘বরাবর এক লাখ টাকা’। এভাবে প্রায় ৭/৮ মিনিট দরদাম করার পর গরুটি এক লাখ ১৫ হাজার টাকায় কিনে নিলেন বহদ্দারহাটের বাসিন্দা মিজান। তিনি আজাদীকে বলেন, গত কয়েকদিনের তুলনায় আজ (গতকাল) দাম একটু কম মনে হচ্ছে। বেপারি আজাদীকে জানান, কুষ্টিয়া থেকে ৯টি গুরু এনেছেন তিনি। এতদিন একটিও বিক্রি হয়নি। বাজার যেহেতু শেষের দিকে তাই লাভ একটু কম হলেও বিক্রি করে দিচ্ছেন। ৯টির মধ্যে গতকালই তিনটি বিক্রি হয়েছে তার। বিবিরহাট বাজারের এ দৃশ্য থেকে গতকালের কোরবানি পশুর হাটের বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায়। অর্থাৎ গতকাল বেড়েছে বিক্রি। সাথে বেপারিরাও অল্প লাভে গরু বিক্রি করে দিচ্ছেন। এতে তারা যেমন খুশি তেমনি সন্তুষ্ট বিক্রেতারাও।

নগরে এবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় স্থায়ীঅস্থায়ী ১২টি হাট বসেছে। গতকাল ৬টি বাজারের ইজারাদার, গরু বেপারি এবং ক্রেতাদর্শনার্থীর সঙ্গে কথা হয়। সবাই বলছেন, গতকাল বাজার ছিল জমজমাট। এর কারণ হিসেবে তারা বলছেন, কোরবানি পশুর হাট শুরু হওয়ার থেকে গতকাল ছিল প্রথম বন্ধের দিন। এতদিন কর্মব্যস্ততার জন্য বাজারে আসার সময় হয়ে উঠেনি। তাই গতকাল শুক্রবার সময় সুযোগ পেয়েই বাজারে চলে আসেন। তাছাড়া এর আগে বাজারে আসলেও গরু রাখার সমস্যার কারণে কিনেননি। যেহেতু কোরবানির দিন ঘনিয়ে আসছে তাই আর দেরি না করে গরু কেনায় মনোযোগ দেন।

গতকাল সকালে সাগরিকা পশুর হাট থেকে এক লাখ ৮০ হাজার টাকায় একটি গরু কেনেন হালিশহরের রিদুয়ান। তিনি বলেন, গরুর দাম একটু পড়তির দিকে মনে হচ্ছে। না হলে আজ (গতকাল) যে গরু নিলাম সেরকম প্রায় একই সাইজের গরু গতকাল (বৃহস্পতিবার) দুই লাখ টাকার কমে দিচ্ছিল না। গতকাল বিবিরহাটে কথা হয় বেপারি পারভেজের সঙ্গে। তিনি বলেন, আটটি গরু এনেছি। এতদিন বাজারে ক্রেতাই ছিল না। আজ (গতকাল) লোকজন বেড়েছে। বিক্রিও হচ্ছে। তার নিয়ে আসা গরুগুলোর মধ্যে গতকালই একটি বিক্রি হয়েছে বলে জানান।

এবার নগরের হাটগুলোতে কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুর, সাতক্ষীরা, গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কুমিল্লা, নাটোরসহ অন্যান্য এলাকা থেকে গরু এনেছেন বেপারিরা। আছে চট্টগ্রামের হাটহাজারী, পটিয়া, আনোয়ারা ও বাঁশখালী থেকে নিয়ে আসা গরুও। স্থানীয় বিভিন্ন খামারে হৃষ্টপুষ্টকৃত প্রচুর গরুও আনা হয়েছে বিক্রির জন্য।

এবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনায় বসা হাটের মধ্যে স্থায়ী তিনটি স্থায়ী হাট হচ্ছেসাগরিকা পশুর বাজার, বিবিরহাট গরুর হাট ও পোস্তারপাড় ছাগলের বাজার। অস্থায়ী হাটগুলো হচ্ছেমধ্যম হালিশহর মুনির নগর আনন্দ বাজার সংলগ্ন রিং রোডের পাশে খালি জায়গা, মোহরা ওয়ার্ডের জানালী রেল স্টেশন সংলগ্ন রেলওয়ের পরিত্যক্ত খালি জায়গা, কর্ণফুলী পশুর বাজার (নূর নগর হাউজিং এস্টেট অথবা বহদ্দারহাট এক কিলোমিটার হতে শাহ আমানত ব্রিজের উত্তর পাশ পর্যন্ত), ৪১নং ওয়ার্ডের বাটারফ্লাই পার্কের দক্ষিণে টিকে গ্রুপের খালি মাঠ, ৪০নং উত্তর পতেঙ্গা ওয়ার্ডের পূর্ব হোসেন আহম্মদ পাড়া সাইলো রোডের পাশে টিএসপি মাঠ ও একই ওয়ার্ডের মুসলিমাবাদ রোডের সিআইপি জসিমের খালি মাঠ, ২৬ নং ওয়ার্ডের বড়পোল সংলগ্ন গোডাউনের পরিত্যক্ত মাঠ, ৩নং পাঁচলাইশ ওয়ার্ডের ওয়াজেদিয়া মোড় এবং ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের আউটার রিং রোডস্থ সিডিএ বালুর মাঠ।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ২শ মেট্রিক টন পণ্য নিয়ে কক্সবাজার থেকে জাহাজ গেল সেন্টমার্টিন
পরবর্তী নিবন্ধপবিত্র হজ আজ