আনোয়ারায় উপজেলার উপকূলীয় রায়পুর ইউনিয়নের দক্ষিণ পরুয়াপাড়া এলাকায় বেড়িবাঁধে দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। বাঁধের বিভিন্ন অংশ দখল করে নির্মিত হচ্ছে বাণিজ্যিক কটেজ ও হোটেল। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। বর্তমানে দক্ষিণ পরুয়াপাড়া থেকে পারকি সৈকত পর্যন্ত বেড়িবাঁধ দখল হচ্ছে। বাঁধে কটেজ নির্মাণের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ। আর প্রশাসন বলছে, দুয়েকদিনের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এক বছরের বেশি সময় ধরে স্থানীয় প্রভাবশালীরা দক্ষিণ পড়ুয়াপাড়া এলাকায় বেড়িবাঁধ দখল করে নির্মাণ করে চলেছে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, বিনোদন কটেজ ও দোকানপাট। এর ফলে বাঁধের প্রশস্ততা কমে যাওয়ার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বেড়ে গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের মালিকানাধীন বেড়িবাঁধ দখল করে রেস্টুরেন্ট ও কটেজ নির্মাণ করছে। এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে উপজেলা প্রশাসনকে অনুরোধ করেও কোনো সহযোগিতা পাইনি। যার ফলে কটেজ নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে পারিনি। তবে এ ব্যাপারে আমরা শীঘ্রই অভিযান পরিচালনা করব।
সরেজমিনে দেখা যায়, পরুয়াপাড়া এলাকার মতো উপকূলীয় বেড়িবাঁধের বিভিন্ন অংশ দখল করে বসতঘর, দোকানপাট নির্মাণ চলছে। বর্তমানে পারকি থেকে বারআউলিয়া, গহিরা, সরেঙ্গাসহ বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ দখল করে স্থাপনা নির্মাণের ঘটনা বেড়ে চলেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এসব কাজে পানি উন্নয়ন বোর্ড নীরব দর্শকের ভূমিকায় থাকে। যার ফলে দখলদাররা সহজে বাঁধ দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে। স্থানীয় প্রশাসনও নীরব থাকে বলে অভিযোগ তাদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, বেড়িবাঁধের পাশ দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে দোতলা কটেজ। বাঁধের উপর নির্মাণ করা হয়েছে বাণিজ্যিক কটেজ। বেড়িবাঁধের বিশেষ অংশ (শোলডার) লোহা দিয়ে প্রাচীরের মতো ঘিরে দখল পাকাপোক্ত করা হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি, এভাবে প্রকাশ্যে বেড়িবাঁধ দখল করে পর্যটন কেন্দ্রের আদলে কটেজ, হোটেল নির্মাণের ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ। দ্রুত বেড়িবাঁধ দখলমুক্ত করার দাবি জানান তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শওকত ইবনে সাহীদ বলেন, বাঁধে কটেজ নির্মাণের বিষয়টি অবগত হয়েছি। উপকূলীয় রায়পুর ইউনিয়নের বেড়িবাঁধ শীঘ্রই দখলমুক্ত করব। এই ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, কয়েকদিন আগে একটা বিশেষ অভিযানে যাওয়ার সময় বেড়িবাঁধের উপর কটেজ নির্মাণের বিষয়টি আমার নজরে আসে। বিষয়টি আমলে নিয়েছি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হুসাইন মুহাম্মদ বলেন, বেড়িবাঁধ দখলকারীদের বিরুদ্ধে দুয়েকদিনের মধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হবে।