বেইজিংয়ের নজর মধ্যপ্রাচ্যের দিকে

তেহরানের সাথে সহযোগিতা চুক্তি

| বৃহস্পতিবার , ১ এপ্রিল, ২০২১ at ৬:৩০ পূর্বাহ্ণ

চীন ও ইরান গত সপ্তাহান্তে একটি চুক্তিতে সই করেছে। দেশ দুটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেছেন, এই চুক্তির মাধ্যমে আগামী ২৫ বছর দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্ব বজায় থাকবে। চুক্তির বিস্তারিত এখনো প্রকাশিত হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে ইরানের তেল কিনবে চীন। পাশাপাশি ইরানে কিছু বিনিয়োগও করবে চীন। নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানে বিদেশি বিনিয়োগ অনেকটা বন্ধই রয়েছে।
চীনের সুবিস্তৃত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ কর্মসূচিতে সর্বশেষ সংযোজন এটি। বিশ্ব শক্তি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে এমন সব যোগাযোগ বাড়াতে হবে বেইজিংকে।
চীন নিজেকে একবিংশ শতাব্দী ও পরবর্তী বিশ্বের উদীয়মান শক্তি হিসেবে মনে করে। এ পর্যায়ের শক্তিধর কোনো রাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যকে বাদ দিয়ে এগিয়ে যেতে পারে না। ইরানের মতো স্বল্পমেয়াদে সুবিধা নেওয়ার চেয়ে কৌশলগত এই সহযোগিতা হয়ত উপসাগরীয় অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদে চীনের জন্য গুরুত্ব বহন করে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই এর মধ্যপ্রাচ্য সফর শুধু তেহরানে চুক্তি সইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না।
গত বছর এই সহযোগিতা চুক্তির খসড়া ফাঁস হওয়ার পর অনেক ইরানি নাগরিক চীনের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। বেল্ট অ্যান্ড রোডসের চুক্তিগুলো সাধারণত চীনের স্বার্থই রক্ষা করে থাকে। এদের মধ্যে কিছু প্রাথমিকভাবে আকর্ষণীয় মনে হলেও শেষ পর্যন্ত ছোট ও গরিব দেশগুলোর জন্য সেগুলো গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইরান চীনের চেয়ে আকারে ছোট হলেও দেশটির বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ এবং প্রতিবাদী বৈদেশিক নীতির কারণে এর একটি স্বকীয়তা রয়েছে। নতুন চুক্তি ইরান ও আমেরিকার মধ্যে দ্বন্দ্বের রসদ যোগাবে।
ইরান ও ওয়াশিংটনে বাইডেন প্রশাসন দুই পক্ষই বলেছে, তারা ইরানের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক চুক্তিতে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের যোগ দেওয়ার পক্ষে। এই চুক্তি যৌথ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা (জেসিপিওএ) হিসেবে পরিচিত। ২০১৮ সালে এই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে নিয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সাথে চুক্তিটিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন তিনি। তিনি দাবি করেছিলেন, ইরানকে পরমাণু অস্ত্র লাভে নিরস্ত্র করার চেয়ে তার প্রক্রিয়া বেশি সহজ ছিল।
এখন চীনের সাথে যেহেতু ইরান একটি চুক্তি সই করেছে এবং এই দেশটিও যেহেতু জেসিপিওএর অংশ, তাই ধারণা করা হচ্ছে, সহযোগিতা শুধু তেল বিক্রির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। কারণ নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে ইরানের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্তু হয়েছে। এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সমঝোতায় ইরানকে সুবিধা দেবে বলে ধরা হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনিহতদের স্মরণ বিক্ষোভকারীদের কর্মী সরাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
পরবর্তী নিবন্ধইয়ং টাইগার্স ক্রিকেটে রাঙামাটির জয়লাভ