ওরা ৮ জন। সবাই চন্দনাইশ থেকে যাচ্ছিলেন ফটিকছড়িতে আত্মীয়ের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে। পথে হাটহাজারীতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় চলে গেলেন ৭ জন। বেঁচে আছেন কেবল বাপ্পা দাশ (৩২) নামে একজন। এ তথ্য জেনে স্থানীয়রা বলাবলি করছিলেন, ভাগ্যই বাঁচিয়েছে বাপ্পাকে। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা ও পুলিশ উদ্ধার করে তাকে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। এতে তিনি সামান্য সুস্থ হয়ে উঠেন। তখনো তিনি জানতেন না মা, মামী, মামাতো ভাইবোনসহ পরিবারের ৭ জন মারা গেছেন।
বাপ্পা দাশের সঙ্গে কথা হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তিনি জানান, তারা চন্দনাইশ উপজেলার জোয়ারা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ধোপা পাড়া থেকে সকালে রওনা দেন। চট্টগ্রাম শহরে এসে নতুন পাড়া থেকে টেক্সি নেন। সেই টেক্সি চারিয়া এলাকায় এলে চট্টগ্রামগামী বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এরপর তিনি আর কিছু জানেন না। যখন জ্ঞান ফিরে, নিজেকে হাসপাতালের বেডে দেখতে পান।
রীতা রানীর মায়ের আহাজারি : হাটহাজারীতে দুর্ঘটনায় মেয়ে রীতা রানী ও নাতি–নাতনিদের হারিয়ে ছবি রানী দাশ শুধু আহাজারি করছেন। তাকে ঘিরে থানা এলাকায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে।
গতকাল থানা এলাকায় মেয়ে রীতা রানী দাশ ও চার নাতি–নাতনি শ্রাবন্তী দাশ, বর্ষা দাশ, দ্বীপ দাশ ও দিগন্ত দাশের লাশ দেখে তিনি বুক ফাটা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তার কান্নায় উপস্থিত লোকজন কেউ স্থির থাকতে পারেননি। স্বজন ও উপস্থিত লোকজন তার কান্না থামাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। বুক ফাটা কান্নার আওয়াজে সড়কের পাশ দিয়ে যাওয়া যাত্রীরাও শোকাহত হন। আহাজারি করার সময় তিনি বলছিলেন, আমি কাকে নিয়ে বাঁচব? আমি তো সব হারিয়েছি। এই শোক কীভাবে ভুলব? সৃষ্টিকর্তা কেন আমাকে এই শাস্তি দিল? আমি কী অপরাধ করেছি?