রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন কৃষি জমিতে সোনালি ধানে ভরেছে দিগন্ত বিস্তৃত কৃষি মাঠ। ইতিমধ্যেই আগাম জাতগুলোর ধান কেটে ঘরে তুলছেন কৃষকরা। তবে কয়েক দিনের হঠাৎ বৃষ্টি–বাতাসে কোথাও কোথাও নুয়ে পড়েছে পাঁকা ধান। এতে চিন্তার ভাঁজ কৃষকের কপালে। তবে কৃষি মাঠে পানি না জমলে কোনো ক্ষতি হবে না বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এরমধ্যেই ধানের বাম্পার ফলনের প্রত্যাশা কৃষকদের।
সরেজমিনে পৌরসভার নোয়াগাঁও বিল, গুমাইবিল, তলয়ভাঙা বিল, পোমরা, বেতাগী, পারুয়া ইউনিয়ন, উত্তর ও দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন কৃষি মাঠে পাকা ও আধাপাকা ধানে ভরেছে মাঠের পর মাঠ। সবুজের বিস্তৃর্ণ কৃষি মাঠ অল্পদিনেই সোনালি রং ধারণ করেছে। কোথাও ধান কেটে ঘরে তুলছেন কৃষক। কিন্তু গেল কয়েকদিন ধরে রাতে হঠাৎ করে বৃষ্টি ও বাতাস বইছে। এতে এসব এলাকায় আমন ধানের আবাদ নুয়ে পড়ায় চিন্তিত কৃষকরা। লাগাতার বৃষ্টি হলে পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়েও শঙ্কা দেখা দেবে বলে জানান তারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আমন মৌসুমে এবার ১৫ হাজার ৩২০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে। এরমধ্যে শস্যভান্ডার গুমাইবিলের ৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে এবার আমন রোপণ করা হয়েছে। এবার বিলে ব্রীধান–৪৯, ৫১, ৫২, ৭৫, ১০৩, কাটারী, সাদা পাইজামসহ বিভিন্ন উন্নত জাতের আমন আবাদ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই আগাম জাতসহ বেশ কিছু এলাকায় ধান কাটা চলছে এবং সপ্তাহখানেকের মধ্যে পুরোদমে কাটা শুরু হবে বলে জানান কৃষি সংশ্লিষ্টরা। গেল মৌসুমে হেক্টর প্রতি ৫.৮ মেট্রিক টন ধান এবং চাল উৎপাদন হয়েছিল ৩.৮ মেট্রিক টন। বাজারে ধান ও চালের ভাল দাম পাওয়াতে এবার আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি আবাদ হয়েছে বলে জানা যায়।
নোয়াগাঁও এলাকার কৃষক আবুল কালাম জানান, বিলের ধানগুলো পাকা ও আধাপাকা অবস্থায় রয়েছে। এরমধ্যে বৃষ্টি ও বাতাসে বেশ কিছু ধান হেলে পড়েছে। পাকাধানগুলো হেলে পড়ার পাশাপাশি কিছু আধাপাকা ধানও রয়েছে। আধাপাকা থাকা ধানগুলো নষ্ট হতে পারে বলে আশংকা করেন তিনি।
কৃষক আজিজুল ইসলাম জানান, প্রায় প্রতি বছর গুমাইবিলে আমন মৌসুমে বন্যায় ধানের ক্ষতি হতো। কিন্তু এবার এখনও পর্যন্ত কোন বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি। ফলে বেশ ভালো ফলন হয়েছে। তবে কাটার সময়ে এসে কিছু বৃষ্টি হচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে তাদের। এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ধান ঘরে তোলা নিয়ে বিপদে পড়তে হতে পারে বলে আশংকা জানান তিনি।
গুমাইবিলে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা উত্তম কুমার জানান, ইতিমধ্যেই ব্রীধান ৭৫ ও ১০৩ এবং সাদা পাজামের মতো আগাম জাতগুলো কাটা হচ্ছে। নভেম্বরের শেষের দিকে পুরোদমে কাটা শুরু হবে। ফলন বেশ ভালো হয়েছে। এবারের ফলন গড়ে ৬ মেট্রিক টনের বেশি ছাড়িয়ে যেতে পারে হলে জানান তিনি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস জানান, এবার আমনের ফলন প্রত্যাশার চেয়েও ভালো হয়েছে। কোথাও কোথাও কিছু ধান হেলে পড়লেও তা খুবই সামান্য। পানি না জমলে এতে ধানের কোন ক্ষতি হবে না। এছাড়া ইতিমধ্যেই ৭% ধান কাটা হয়ে গেছে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে পুরোদমে কাটা শুরু হবে এবং কৃষকরা বাম্পার ফলন পেতে যাচ্ছে বলে জানান তিনি।












