আনোয়ারায় চলতি আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে চাষ হলেও প্রত্যাশিত উৎপাদন ঘরে তোলা নিয়ে সংশয়ে পড়েছে কৃষকেরা। ফসল ঘরে তোলার আগ মুহূর্তে হঠাৎ বৃষ্টির হানায় কৃষকের মাথায় হাত পড়েছে। এবার উপজেলার ১১ ইউনিয়নের ৪০ হাজার কৃষি পরিবার ৭ হাজার ৫৫৭ হেক্টর জমিতে আমন ফসলের আবাদ করেছে। যা পুরো উপজেলার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বলে উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে। কিন্তু আমন ফসল ঘরে তোলার আগমুহুর্তে ফসলের মাঠে বৃষ্টির হানায় বিভিন্ন ইউনিয়নের আমানের মাঠের ধান লুটিয়ে পড়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা প্রত্যাশিত ফলন পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন। তবে উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, ধানের মাঠে পানি জমে না থাকলে বা ভারী বৃষ্টি না হলে তেমন কোনো ক্ষতির সম্ভাবনা দেখছেন না তারা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলার ১১ ইউনিয়নের মধ্যে বারখাইন, হাইলধর, বরুমচড়া, রায়পুর, পরৈকোড়া, বটতলী, বারশত ও জুঁইদন্ডি ইউনিয়নে আমনের ফলন বেশি হয়েছে। তাছাড়া বৈরাগ, আনোয়ারা, চাতরি ইউনিয়নেও আমন চাষ ভালো হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন গ্রামে আমন ধান পেকে গেছে। বৃষ্টি না পড়লে আজ–কালের মধ্যে আমন ধান কাটা শুরু হত বলে কৃষকরা জানিয়েছে।
বরুমচড়া গ্রামের কৃষক মো. জাফর বলেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে আমার আমন ধানের বেশ কয়েকটি জমির ফসল মাটিতে লুটিয়ে গেছে। তিনি বলেন, লুটিয়ে পড়া ধান সবে মাত্র শীষ বের হয়েছে। তাই ফলন পাওয়া নিয়ে দুঃচিন্তায় আছি। এটা আমার একার সমস্যা না। আমার মতো অনেকেরই একই অবস্থা।
শোলকাটা গ্রামের কৃষক মনির আহমদ বলেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে অনেক জমির ধান পড়ে গেছে। পড়ে যাওয়া ধানগুলো পরিপক্ব না হওয়ায় ভালো ফলনের আশা নেই।
উপজেলা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা সরোয়ার আলম বলেন, চলতি আমন মৌসুমে কৃষি অফিস কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ সহায়তা প্রদান করেছে। চলতি আমন মৌসুমে ফসলের ফলনও ভালো হয়েছে। গত আগস্ট মাসে আমন চাষ শুরু হয়। বর্তমান নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ধান কাটা শুরুর কথা ছিল। গত কয়েক দিনের বৃষ্টির কারণে তা পিছিয়ে গেছে। আমরা আশা করছি, দুই একদিনের মধ্যে ধান কাটা শুরু হবে। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন ইউনিয়নে বৃষ্টির কারণে কিছু ধান মাটিতে পড়ে গেছে। তবে আশা করছি তেমন ক্ষতি হবে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীম আহমেদ সরকার বলেন, চলতি আমন মৌসুমে আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৫৫০ হেক্টর। কিন্তু এবার আমন চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৫৫৭ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার থেকে দুই হেক্টর বেশি। তিনি আরো জানায়, ভারী বৃষ্টি না হলে ধানের তেমন ক্ষতি হবে না।












