সামান্য বৃষ্টিপাতের পর জমিতে অল্প একটু পানি জমা হতে দেখে কৃষকরা নেমে পড়েছেন মাঠে। ইতিমধ্যে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের তেপান্তর জুড়ে কৃষকদের ব্যস্ততা লক্ষ করা গেছে। শ্রাবণের শুরু থেকেই যেখানে আমন রোপণ শুরু হয় সেখানে শ্রাবণ শেষ হয়ে ভাদ্রও শেষ হবার পথে। তাই আর কাল ক্ষেপণ করতে চাইছেন না তারা। বিশেষ করে যাদের রোপা আমনের বীজতলায় চারা বড় হয়ে গেছে ওরা দ্রুতই শেষ করতে চাইছে চারা রোপণ।
গত বৃহস্পতিবার পড়ন্ত বিকেলে মঘাদিয়া ইউনিয়নের শেখেরতালুক গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম ব্যস্ত ছিলেন রোপা আমনের জমি তৈরিতে। এসময় তিনি বলেন, আল্লাহর কাছে বৃষ্টি চাইছিলাম শুধু। আজও ভোরে মোনাজাত করে দোয়া করেছি। এখন যা বৃষ্টি হয়েছে এবং জমিতে যে পরিমাণ পানি জমেছে তাতে চারাগুলো রোপণ করে নিতে পারব। অনেক জমিতে রোপণ হয়েও গেছে।
আমবাড়িয়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এবার যেমন বিদ্যুতে গোলযোগ করছে তেমনি করছে আকাশ। তবুও আশা-ভরসা নিয়ে কৃষকরা মাঠে নেমেছে। বাকিটা উপরওয়ালা জানেন। গড়িয়াইশ গ্রামের কৃষক কৃষ্ণ দাস বলেন, মাঠে চারা রোপণ শুরু করেছি। তবে আরো বৃষ্টি না হলে আবার কষ্ট করতে হবে। দুর্গাপুর গ্রামের কৃষক আমির হোসেন বলেন, গত দুবছর ভালো ফলন আর ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা বেশ খুশি। এবার ভাগ্যে কি আছে বোঝা যাচ্ছে না। তবে কদিন একটু বৃষ্টিপাত হলে কৃষকদের সব শঙ্কা দূর হয়ে যাবে।
মীরসরাই উপজেলা কৃষি সুপারভাইজার কাজী নুরুল আলম বলেন, এবার আমনের লক্ষ্যমাত্রা ২১ হাজার ৬শ হেক্টর। ইতিমধ্যে রাতে কিছু বৃষ্টিপাত হওয়ায় উপজেলার ৪০ হাজার কৃষক এবার আমন আবাদ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। বীজতলাগুলো থেকে চারা নিয়ে কৃষকরা প্রায় ৯০ শতাংশ আমন রোপণ সম্পন্ন করেছে। আশা করা যাচ্ছে সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে রোপা আমানে উৎসবমুখর হয়েই থাকবে প্রান্তর।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ সাহা বলেন, প্রাকৃতিক প্রতিকূলতা কাটাতে খরিপ-১/২০১৮-১৯ মৌসুমে উফশী আউশ ও নেরিকা আউশ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে অনেক আউশ চাষিকে বিনামূল্যে বীজ, রাসায়নিক সার ও আগাছা দমনে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এখন আশা করছি লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবে।