কয়েকদিনের টানা বর্ষণে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দোহাজারী পৌরসভার দিয়াকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের যোগাযোগ ব্যবস্থা। বৃষ্টির পানির স্রোতে সড়কের মাটি সরে যাওয়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা চলাচল করতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। পাহাড় কেটে আশ্রয়ণ প্রকল্পটি নির্মাণ করায় পাহাড় ধসে প্রাণহানিসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের।
বৃষ্টির পানিতে রাস্তা ধসের খবর পেয়ে চন্দনাইশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম গত মঙ্গলবার ওই এলাকা পরিদর্শন করেন। এ সময় দোহাজারী পৌরসভার মেয়র মো. লোকমান হাকিম, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মাদ জুনাইদ আবছার চৌধুরী, দোহাজারী পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. নাঈম উদ্দীন, স্থানীয় কাউন্সিলর মো. নাজিম উদ্দীন, দিয়াকুল আশ্রয়ন প্রকল্পের সভাপতি মো. লিটন, সাধারণ সম্পাদক মো. মাহাবুব উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, ১৯৯৯ সালে দিয়াকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পে নির্মিত ১০০টি টিনের ঘর ভেঙে ২০২৩ সালে নতুন করে ১১৬টি পাকা ঘর নির্মাণ করে উপজেলা প্রশাসন। সমপ্রতি উপজেলা প্রশাসন উপকারভোগীদের নিকট আশ্রয়ণের ঘরগুলো হস্তান্তর করে। এরমধ্যে ৮৩ পরিবার মুসলিম এবং ৩৩ পরিবার হিন্দু সমপ্রদায়ের। পাহাড় কেটে আশ্রয়ণের এসব ঘর নির্মাণ করা হলেও পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মাণ করা হয়নি ড্রেন। ফলে কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে আশ্রয়ন প্রকল্পের মধ্যখানে এবং যোগাযোগের রাস্তা ধসে যায়। এছাড়াও পাহাড় কেটে অপরিকল্পিতভাবে ঘরগুলো তৈরি করায় পাহাড় ধসে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন আশ্রয়ণের বাসিন্দারা।
দিয়াকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের সভাপতি মো. লিটন জানান, কয়েকদিনের বৃষ্টিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মধ্যে মুসলিমদের ৮৩ পরিবারের যোগাযোগের রাস্তা ধ্বসে যাচ্ছে। গত রমজানের আগে উপকারভোগীদের কাছে আশ্রয়ণের ঘরগুলো হস্তান্তর করা হলেও পাকা করা হয়নি যোগাযোগের রাস্তা এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মাণ করা হয়নি ড্রেন। তিনি পাহাড় ধসের আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বৃষ্টি হলেই পাহাড়ের অংশ ভেঙে পড়ছে। তাই পাহাড়ের পাশে পাকা ওয়াল নির্মাণ করা জরুরি।
দোহাজারী পৌরসভার মেয়র মো. লোকমান হাকিম জানান, বিগত কয়েকদিনের বর্ষণে আশ্রয়ণ প্রকল্পের রাস্তার মাটি ধুয়ে গেছে। চলতি বৃষ্টির মধ্যে আশ্রয়ণের যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে পৌরসভার পক্ষ থেকে গতকাল বুধবার থেকে প্রাথমিক সংস্কার কাজ শুরু করা হয়। পরবর্তীতে টেকসই প্রকল্প হাতে নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম জানান, পাহাড় ধস থেকে রক্ষা পেতে আশ্রয়ণের চারপাশে প্যালাসাইডিং কাজের জন্য আশ্রয়ণ প্রকল্পের পিডি বরাবর তিনি চিঠি লিখেছিলেন। এ ব্যাপারে জুন ক্লোজিংয়ের আগেও যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। পরিদর্শনের চিত্র তুলে ধরে আবার রির্পোট পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।