বৃষ্টিতে নির্মাণাধীন সড়কে ধস, ভেসে গেছে ইট-বালু

রাঙামাটির লংগদু

রাঙামাটি প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২৯ মে, ২০২৫ at ৮:৪৭ পূর্বাহ্ণ

রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় ভারী বৃষ্টিতে একটি নির্মাণাধীন সড়কের বিভিন্ন অংশ ধসে গেছে। পানির স্রোতে ভেসে গিয়েছে ইট, বালু ও কংক্রিট। গত সোমবার বিকেল ও রাতের দুই দফার বৃষ্টিতে এমন ঘটনা ঘটেছে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দজরপাড়া এলাকায়। সমপ্রতি দজরপাড়া থেকে ভুঁইয়াছড়া এলাকায় পর্যন্ত একটি কার্পেটিং সড়ক নির্মাণের কাজ চলছিল। সোমবার এক ঘণ্টার বৃষ্টি ও ঢলের পানিতে পুরো সড়কের বিভিন্ন স্থানে ইট, কংক্রিট ও বালু পানিতে ভেসে যায়। বর্তমানে ধসে যাওয়া সড়কটি দিয়ে স্থানীয়দের হেঁটে চলাচল করাও অসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যানবাহন চলাচল এবং কৃষিপণ্য পরিবহনেও। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) লংগদু উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২২৩ অর্থবছরে সড়কটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। প্রায় আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ কোটি ৯ লাখ টাকা। নির্মাণকাজের কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এস অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা। যদিও উপঠিকাদার হিসেবে কাজ করছেন সাইফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। কার্যাদেশ পাওয়ার প্রায় বছরখানেক পর সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।

স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল চাকমা বলেন, গত ৮ মাস ধরে রাস্তাটির নির্মাণ কাজ চলছে। গত সোমবার বৃষ্টিতে সড়কটি ধসে গেছে। এখন আমাদের চলাচলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এর আগে ইটের সড়কটি আমাদের জন্য ভালো ছিল। স্থানীয় কার্বারি (পাড়াপ্রধান) দীপ্ত জীবন চাকমা বলেন, রাস্তাটি ব্যবহার করার আগেই শেষ হয়ে গেল। পুনরায় নির্মাণ করতে আরও অনেক সময়ের ব্যাপার। এখন আবারও এখানকার মানুষের চলাচলে অনেক কষ্ট হবে।

জানতে চাইলে লংগদু সদর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বিনয় চাকমা বলেন, এলাকাটি আমার ওয়ার্ডের মধ্যে পড়েছে। রাস্তাটি নির্মাণে এখানে তাড়াহুড়া করে মাটির ওপর ইট কংকর বিছানো হয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই মাটি ধসে গেছে এবং ইট, কংকর, বালু সব ভেসে গেছে। এই বর্ষায় আর এখানে কাজ করা সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না। স্থানীয় বাসিন্দাদের ভোগান্তি বেড়ে গেল। সড়ক নির্মাণে ঠিকাদারের গাফিলতি ও এলজিইডির তদারকির অভাবে এমন পরিস্থিতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন লংগদু সদর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান বিক্রম চাকমা। ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, লংগদু ইউনিয়নের ওয়ার্ডগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনো অনেক নাজুক। এই সড়কটি হলে উপজেলা সদরের সাথে ৪টি ওয়ার্ডের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন হবে। আমরা চাই দ্রুত সড়কটি পুনর্নির্মাণ করে জনসাধারণের চলাচলের উপযুক্ত করা হোক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক নির্মাণ কাজের উপঠিকাদার সাইফুল ইসলাম বলেন, সড়কের কাজটি চলমান অবস্থায় ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বেশ কিছু স্থানে ধসে গেছে। এসব স্থানে গার্ডওয়াল দিতে হবে, তা নাহলে রাস্তা টিকিয়ে রাখা যাবে না। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলো পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। এদিকে, এলজিইডির লংগদু উপজেলা প্রকৌশলী শামসুল আলম বলেন, আমি শুনেছি সড়কটি বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে কাজ যেহেতু এখনো শেষ হয়নি তাই ঠিকাদারকে সড়কটি পুনর্নির্মাণ করে দিতে হবে। তবে সড়কের কাজ খুব ধীরগতিতে হচ্ছে। এ বছরের শেষের দিকে কাজটি শেষ হবে বলে আশা করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধক্যাপের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক
পরবর্তী নিবন্ধলামাবাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গল্প আহরণ প্রতিযোগিতা