করোনাভাইরাসের টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়ার ছয় মাস পর শরীরের অ্যান্টিবডির মাত্রা কমে আসার তথ্য মিলেছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. শারফুদ্দিন আহমেদ গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে এ গবেষণার তথ্য তুলে ধরে বলেছেন, কোভিড টিকার বুস্টার ডোজ যারা নিয়েছেন, তাদের সবার শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া গেলেও ছয় মাস পর তা পরিমাণে কমে যায়। খবর বিডিনিউজের।
‘হেমাটোলজিক্যাল প্যারামিটারস অ্যান্ড অ্যান্টিবডি টাইটার সিঙ মান্থস আফটার থার্ড ডোজ অফ ভ্যাকসিনেশন এগেইনস্ট সার্স কোভ-টু’ শীর্ষক
এ গবেষণার আওতায় ২২৩ জনের শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা পরীক্ষা করা হয়। তাতে করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়া ২২৩ জনের মধ্যে ৯৮ শতাংশের শরীরে অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়। তবে ছয় মাস পর অ্যান্টিবডির মাত্রা কমে আসে। এ সময় ৭৩ শতাংশের অ্যান্টিবডির মাত্রা প্রতি মিলিলিটারে ৬৭৯২ এইউ (আরবিট্রারি ইউনিট) থেকে কমে ৩৯৬৩ এইউ/এমএল পর্যন্ত নেমে আসে। ওই ২২৩ জনের মধ্যে ২ জনের শরীরে টিকা নেওয়ার ছয় মাস পর কোনো ধরনের অ্যান্টিবডি পাওয়া যায়নি।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুস্টার ডোজ নেওয়ার পর শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা আবারও বৃদ্ধি পায়। দেখা গেছে, অ্যান্টিবডির মাত্রা তৃতীয় ডোজ নেওয়ার পর ২০৮৭৮ এইউ/এমএল পর্যন্ত উঠে এসেছে। তবে ৬ মাস পরে তা কমে ১০৬৭৫.৭ এইউ/এমএল পর্যন্ত নেমে আসে।
ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, যাদের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার ইতিহাস রয়েছে, তাদের মধ্যে অ্যান্টিবডির মাত্রা বেশি থাকে। তাদের রক্তে হিমোগ্লোবিন ও প্লাটিলেটসহ অন্যান্য উপাদানে উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি। টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা, কার্যকারিতা এবং সময়ের সাথে সাথে অ্যান্টিবডি কমে যাওয়ার প্রমাণ এ গবেষণায় পাওয়া গেছে। বয়স্ক বা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম- এমন মানুষকে চতুর্থ ডোজ টিকা দেওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে এই গবেষণা ফলাফল কাজে আসতে পারে।
বাংলাদেশে গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি করোনাভাইরাসের টিকাদান শুরু হয়। রোববার পর্যন্ত করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১২ কোটি ৯৮ লাখ ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে ১২ কোটি ১০ লাখ ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ দ্বিতীয় ডোজ এবং ৪ কোটি ২৬ লাখ ৫২ হাজারের বেশি মানুষকে দেওয়া হয়েছে বুস্টার ডোজ।