বুয়েটকে রাজনীতিমুক্ত রাখতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে শিক্ষার্থীদের আর্জি

| বুধবার , ৩ এপ্রিল, ২০২৪ at ১০:৪২ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতিমুক্ত রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আর্জি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সরকারপ্রধানের উদ্দেশে লেখা এক খোলা চিঠিতে তারা বলেছেন, আমাদের অনুরোধ, আপনি দয়া করে আমাদের ক্যাম্পাসে আসুন; ছাত্ররাজনীতিহীন বুয়েট গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষার্থীদের জন্য যে আদর্শ ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে, সেটা আমরা আপনাকে দেখাতে চাই।

উচ্চ আদালতের আদেশে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি ফেরার পথ খোলার পর গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বুয়েটের ড. এম এ রশীদ প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে আসেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা। সেখানে তারা প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে লেখা এই চিঠি পড়ে শোনান। খবর বিডিনিউজের।

চিঠিতে বলা হয়, আমাদের চাওয়া, বুয়েটকে ঘিরে আমাদের জাতির জনকের যে ভিশন ছিল, তাকে বাস্তবায়ন করা হোক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বুঝতে পেরেছিলেন বুয়েটের প্রকৃতি ভিন্ন। তাই তিনি নিজে রাজনীতির আওতা থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বাইরে রেখেছিলেন। আজ যখন তারই গড়ে তোলা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা বুয়েটের মতো বিশেষায়িত একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে যে কোনো মূল্যে রাজনীতির আওতায় আনার কথা বলে, আমরা বিশ্বাস করি তখন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও সিদ্ধান্তকে অপমান করা হয়।

বুয়েটের শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনায় ক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে বুয়েট। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বুয়েটে নিষিদ্ধ হয় ছাত্র রাজনীতি। এরপর থেকে গত সাড়ে চার বছর প্রকৌশল শিক্ষার এই বিদ্যাপীঠে ছাত্র সংগঠনগুলোর রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধই ছিল। এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ একদল নেতাকর্মী বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে নতুন করে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।

তাদের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের মধ্যে পুরকৌশল বিভাগের ২১তম ব্যাচের ছাত্র ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের হলের সিট বাতিল করা হয়। তিনিই সেই রাতে নেতাদের জমায়েত ঘটিয়েছিলেন বলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। এরপর বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি ফেরানোর দাবিতে পাল্টা কর্মসূচি দেয় ছাত্রলীগ। রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে তারা অবিলম্বে বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি চালুর অনুমতি দেওয়ার দাবি জানায়। পরে নিষেধাজ্ঞা ভেঙে প্রকাশ্যে বুয়েট ক্যাম্পাসে গিয়ে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ছাত্রলীগের কয়েকশ নেতাকর্মী।

এদিকে ছাত্র রাজনীতিতে নিষেধাজ্ঞার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সোমবার হাই কোর্টে রিট মামলা করেন হল থেকে বহিষ্কৃত ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম। তার আবেদনের শুনানি করে বুয়েটের নিষেধাজ্ঞার আদেশ স্থগিত করে হাই কোর্ট।

এদিকে গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে বলা হয়, বুয়েট শিক্ষার্থীদের মতামত নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতি চালুর লক্ষ্য নিয়ে তারা সাংগঠনিক কার্যক্রমে যাবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধফেরত যাবে মিয়ানমারের ১৮০ সেনা, ফিরবে ১৭০ বাংলাদেশি : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধআলোচনার টেবিলে দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র