বুনো পথ পেরিয়ে নতুন ঝরনায়

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি | শনিবার , ৩ অক্টোবর, ২০২০ at ৬:৪১ পূর্বাহ্ণ

পাহাড়নদী, ঝিরিঝরনা, সবুজ প্রকৃতি আর বৈচিত্র্যময় পাহাড়। নতুন নতুন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠায় খাগড়াছড়িতে দিন দিন বাড়ছে পর্যটকদের আগমন। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে দেশের এ পাহাড়ি অঞ্চল পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। আর স্থানীয়দের কাছে যেন তা এক ‘ভূস্বর্গ’। খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের সাথে বাড়ছে নতুন নতুন পর্যটন স্পটও। রিছাং ঝরনা, তৈদুছড়া ঝরনা, তুয়ারি মাইরাংসহ অনেক ঝরনার পর মাটিরাঙ্গার দুর্গম জনপদ কাতালমনি পাড়ায় সন্ধান মিলেছে তৈলাফাং ঝরনার। অর্ধশত ফুট উপর থেকে আছড়ে পড়ছে এই ঝরনার পানি।

নতুন সন্ধান পাওয়া তৈলাফাং ঝরনা দেখতে দুর্গম পথ পাড়ি দিচ্ছেন সৌন্দর্য পিপাসুরা। সরকারি উদ্যোগে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো গেলে তৈলাফাং হয়ে উঠতে পারে পাহাড়ের অন্যতম আকর্ষণ।

মাটিরাঙার পাশের উপজেলা পানছড়ি থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক তৌহিদুর রহমান রুবেল বলেন, পর্যটন অবকাঠামো গড়ে তোলা গেলে পর্যটকদের নজর কাড়বে তৈলাফাং ঝরনা।

ঝরনা দেখতে হলে পাড়ি দিতে হবে বুনো পথ। জেলার পানছড়ি ও মাটিরাঙ্গা থেকে সড়ক পথে পানছড়িতবলছড়ি সড়কের প্রিন্সিপল বাগানের একটু সামনে কাতালমনি পাড়াভাইবোনছড়া সংযোগ সড়কে নামতে হবে। সেখান থেকে কাতালমনি পাড়ার দূরত্ব ৭ কিলোমিটার। বৃষ্টি হলে পায়ে হেঁটে যেতে হবে। শুষ্ক মৌসুমে মোটরসাইকেলযোগে ৪/৫ কিলোমিটার যাওয়া যায়। সেখান থেকে ঝরনায় পৌঁছতে হলে পার হতে হবে হবে উঁচু পাহাড়।

ঝরনায় যাওয়ার পথে দূর পাহাড়ে লেবু, কচু, সেগুন বাগান ও জুমের দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হবেন যেকোনো পর্যটক। সবুজ পাহাড়, গভীর অরণ্য আর ঝরনাগুলো মুগ্ধ করবে পর্যটকদের। তৈলাফাং পৌঁছাতে কিছু কিছু জায়গায় প্রাকৃতিক লতা বেয়ে নামতে হয়। ঝিরিপথ হাঁটলে চোখে পড়বে তৈলাফাং ঝরনা। তৈলাফাং ঝরনার বিপরীতে একটু উপরের পাথুরে জঙ্গলের শেষে দেখা মিলবে ছোটবড় আরো দুটি ঝিরিঝরনা। ঝিরির দুই পাশে টারশিয়ান যুগের উঁচু পাথুরে পাহাড়। পাথুরে দেয়াল বেয়ে নামছে জলের ধারা।

এখানে ঘুরতে আসা পানছড়ির উল্টাছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম বাবুল বলেন, তৈলাফাং ঝরনায় পৌঁছাতে দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হলেও অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের কাছে এটি হতে পারে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। পাহাড় আর ঝরনা যাদের ভালো লাগে তারা নিঃসন্দেহে এই ঝরনার সৌন্দর্য উপভোগ করবেন।

পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তৈলাফাংয়ে ঘুরে আসা উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা অরুনাঙ্কর চাকমা বলেন, তৈলাফাং ঝরনার যোগাযোগ ব্যবস্থা ঝুঁকিপূর্ণ। সরকারের পক্ষ থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ পরিকল্পিত অবকাঠামো গড়ে তোলা হলে এটি অন্যতম পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে।

তৈলাফাং ঝরনাকে পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানিয়ে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তৃলা দেব বলেন, পর্যটকদের কথা চিন্তা করে মাটিরাঙ্গার রিছাং ঝরনায় ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। সরেজমিনে পরিদর্শন করে সম্ভাব্যতা যাচাই করে তৈলাফাং ঝরনায় যাতায়াতের জন্য সড়ক অবকাঠামোর উন্নয়ন করা হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১৮ ঘণ্টা পর চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেল চলাচল শুরু
পরবর্তী নিবন্ধবয়স-ওজন মিলিয়ে ঝুঁকিতে ট্রাম্প