একাত্তরে বুদ্ধিজীবীদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ‘ভারতীয় সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার একটি সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ’ বলে দাবি করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। ইতিহাসের নানা ‘তথ্য ও সত্য’ সামনে আসায় তা প্রমাণ হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। গতকাল রোববার বিকালে রাজধানীর ফার্মগেইটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের এক আলোচনা সভায় গোলাম পরওয়ার এই দাবি করেন। খবর বিডিনিউজের।
জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘বামপন্থি ও কলকাতাকেন্দ্রিক কিছু বুদ্ধিজীবী এবং ভারতপন্থিরা দীর্ঘদিন ধরে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের জন্য জামায়াতে ইসলামীর নাম জড়িয়ে আসছেন। তবে ইতিহাসের নানা তথ্য ও সত্য সামনে আসায় প্রমাণ হয়েছে, এই হত্যাকাণ্ড ভারতীয় সেনা ও গোয়েন্দাদের সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল। কারণ, ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের প্রাক্কালে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।’
৮ ডিসেম্বরের আগেই ঢাকায় ভারতীয় বাহিনী নেমেছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘এর রেকর্ড রয়েছে। সে সময় রাজধানী ঢাকাসহ পূর্ব পাকিস্তান কার্যত ভারতীয় সেনাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। বিজয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি সেনা ও তথাকথিত রাজাকার–আলবদররা আত্মসমর্পণ কিংবা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে যাওয়ায় ব্যস্ত ছিল। সে অবস্থায় তাদের পক্ষে পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবী হত্যা করার প্রশ্নই ওঠে না। রাও ফরমান আলীসহ বিভিন্ন লেখকের তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৪ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণ করতে চেয়েছিল। তবে ভারতীয় সেনাপ্রধানের ইচ্ছায় তা পিছিয়ে দিয়ে ১৬ ডিসেম্বর আত্মসমর্পণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘ওই সময় ১৪ ডিসেম্বর পরিকল্পিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, প্রথিতযশা সাংবাদিক, লেখক ও শিল্পীদের খুঁজে খুঁজে হত্যা করা হয়– যারা বেঁচে থাকলে স্বাধীন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারতেন।’
গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘ভারতের জনগণের প্রতি আমাদের কোনো আক্রোশ নেই। তবে ভারতের সামপ্রদায়িক হিন্দুত্ববাদী সরকার যারা ক্ষমতায় এখনো আছে, বারবার যারা এসেছে, তারাই এ দেশের স্বাধীন সত্তাকে বিকিয়ে দিয়ে এ দেশের ইসলামি মূল্যবোধ ধ্বংসের জন্য বারবার এ দেশের মানুষের ওপরে হত্যার ষড়যন্ত্র চাপিয়ে দিয়েছে।’
জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তর শাখা আয়োজিত এই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সে শাখার আমির সেলিম উদ্দিন।












