বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের প্রাক্কালে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর সহস্রাধিক বুদ্ধিজীবী পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের শিকার হন যাদের মধ্যে রয়েছে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, লেখক ও শিল্পী প্রমুখ। একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা গোটা মানবজাতিকে হত্যার শামিল। এহেন জঘন্যতম মানবতাবিরোধী অপরাধের নিন্দা জানানোর ভাষা নেই। তদন্ত কমিশন গঠন করে সঠিকভাবে তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করা এবং বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করে ইতিহাসের দায় শোধ করার জোর দাবি জানান। গতকাল দেওয়ানবাজারস্থ জামায়াতে ইসলামীর কার্যালয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, কমরেড তোয়াহার সূত্রে প্রাপ্ত ১৯৬৯ সালে কাজী জাফরের একটি বক্তব্যের অংশ, ‘আমি পূর্ব পাকিস্তানের সবুজ মাটি রক্তে লাল করে দেবো’ রাও ফরমান আলীর ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ ছিলো যার ভিত্তিতে পাকিস্তানপন্থীকে দোষী সাব্যস্ত করার বয়ান প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল। সৈয়দ মবনুরের ‘লাহোর থেকে কান্দাহার’ নামে বইয়ের ১৫৬–৫৭ পৃষ্ঠায় রাও ফরমান আলীর সঙ্গে তার সাক্ষাৎকারের বিবরণ দেয়া হয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডে তার ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘তখন তো ঢাকা ছিল ভারতীয় সৈন্যদের নিয়ন্ত্রণে। তাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করলো কে?’ আমি মনে করি, এ ব্যাপারে কাউকে দায়ী করতে হলে অবশ্যই ভারতকে করতে হবে।
নগর আমীর মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি আরও বলেন, নিরপেক্ষ গবেষক ও বুদ্ধিজীবীদের আরো অনেকে অভিন্ন মতামত দিয়েছেন। হত্যাকান্ডের শিকার বুদ্ধিজীবীরা ছিলেন পাকিস্তানপন্থী। তাদের কেউ ভারতে যাননি। জহির রায়হানের মতো অনেকে ছিলেন চীনপন্থী কমিউনিস্ট। পাকিস্তানি সৈন্যরা তাদের জীবনের সংকটকালে তাদের প্রতি অনুগত বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করতে যাবে কেন? সামরিক বিষয়ে অভিজ্ঞ ব্যক্তি মাত্রই বিশ্বাস করেন যে, পাকিস্তানি সৈন্যদের নাম ব্যবহার করে অন্য কেউ তাদেরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। সন্দেহভাজন হিসেবে ভারতের নাম উচ্চারিত হয় সর্বাগ্রে। ভারতে না যাওয়ায় তারা ভারতের রোষানলে পড়েছিল। শহীদুল্লাহ কায়সারের হত্যাকান্ডে জড়িত ব্যক্তি ‘জল’ চেয়েছিল। জল কোনো মুসলমানের পরিভাষা নয়। ভারতীয় বাঙালিরা জল বলে। তাই বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ডের তীর ভারতের প্রতি। তদন্ত কমিশন করে প্রকৃত সত্য উদঘাটনের আহবান জানান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য চট্টগ্রাম মহানগরীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহ পরিচালনায় উক্ত আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য চট্টগ্রাম মহানগরীর এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মাওলানা খাইরুল বাশার, ডবলমুরিং থানা আমীর ফারুকে আজম, চকবাজার থানা আমীর আহমদ খালেদুল আনোয়ার, কোতোয়ালি থানা নায়েবে আমীর অধ্যাপক আব্দুজ্জাহের প্রমুখ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সিদ্দিকুর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য হামেদ হাসান ইলাহী, প্রফেসর মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।











