বুথফেরত জরিপে পশ্চিমবঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বিজেপির উত্থানের আভাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভোট গণনার সব হিসাব উল্টে গেল। গতকাল ঘোষিত ফলাফলে এ রাজ্যে ৪২টি আসনে মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারে থাকা তৃণমূল পেয়েছে ২৯টি আসন। আর ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি পেয়েছে ১২টি আসন। আর কংগ্রেস পেয়েছে একটি আসন। পশ্চিমবঙ্গে ২০১৯ সালের নির্বাচনে তৃণমূল ২২টি এবং বিজেপি ১৮টি আসন পায়। এবারের নির্বাচনে মমতার রাজ্যে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে নানাভাবে চেষ্টা করেছে মোদির বিজেপি। অন্যদিকে তৃণমূলও নিজেদের কর্তৃত্ব ধরে রাখতে মরিয়া। খবর বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার।
নির্বাচনের ফল ঘোষণার মধ্যেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র পদত্যাগ দাবি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এবার কেন্দ্রেও বিজেপির নৈতিক পরাজয় হয়েছে। তারা এককভাবে সরকার গড়তে পারছে না। ভর করতে হবে বিহারের নীতীশ কুমার ও অন্ধ্রপ্রদেশের চন্দ্রবাবু নাইডুর ওপর। তাই এই পরাজয়ের নৈতিক দায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র অবিলম্বে ইস্তফা দেওয়া উচিত।
পশ্চিমবঙ্গে প্রচারণার সময় মোদি এবং অন্যান্য বিজেপি নেতারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের দিকেই নজর রেখেছিলেন। বিজেপি তৃণমূলের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারি, কয়লা ও গবাদি পশু পাচারের অভিযোগ তুলে দলের কয়েকজন নেতা কারাগারে থাকার ব্যাপারগুলো নিজেদের প্রচারণার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের চেষ্টা করেছিল।
সাত ধাপের ভোটের শেষ ধাপে শনিবার পশ্চিমবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়। অন্তত পাঁচটি সংস্থার বুথফেরত জরিপে বলা হয়, এ রাজ্যে বিজেপির কাছে ২ থেকে ৭টি আসন হারাতে যাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উচ্ছ্বাসে মেতেছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির নেতাকর্মীরা। এঙিট পোলের ফলাফলকে মমতার জনপ্রিয়তা কমার প্রমাণ হিসেবে দেখাচ্ছিলেন কেউ কেউ।
অবশ্য তাতে মমতার আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেনি। বুথফেরত জরিপের আভাস আমলে নিচ্ছেন না জানিয়ে তিনি বলেছিলেন, ামরা দেখেছি ২০১৬, ২০১৯ এবং ২০২১ সালে কীভাবে এঙিট পোল করা হয়েছিল। কোনো ভবিষ্যদ্বাণীই সত্য বলে প্রমাণিত হয়নি।
এদিকে বাম এবং কংগ্রেস জোটের সঙ্গে যারা নির্বাচনে গিয়েছিলেন, তারা ২০১৯ সালের চেযে খারাপ অবস্থানে নির্বাচন শেষ করলেন। নরেন্দ্র মোদি এবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে আর দেশ থাকত না বলে মন্তব্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন, তার পদত্যাগ করা উচিত। এবার আর মোদিকে ছেড়ে দেওয়া হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইন্ডিয়া জোটের অপর সদস্যরাও ছেড়ে দেবেন না। আপনার ম্যাজিক শেষ। এবার পদত্যাগ করতে হবে।