হাটহাজারীর একটি মাদ্রাসায় সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের ডাকা মানববন্ধনে হামলার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার দুপুর ১২ টার দিকে উপজেলার বুড়িশ্চর ইউনিয়নের নজুমিয়াহাট বাজার এলাকার চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়কের উপর এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বুড়িশ্চর জিয়াউল উলুম কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম ফরিদ উদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে একই মাদ্রাসার কিছু শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে একটি মানববন্ধন করান একটি পক্ষ। এসময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত হঠাৎ মাদ্রাসায় ঢুকে ক্লাস থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে দেয়। কয়েকজন শিক্ষক এতে বাধা দিলে তাঁদের মারধর করে ওই দুর্বৃত্তরা। এতে মাদ্রাসা প্রভাষক আবু তাহের ও শিক্ষক আব্দুর রহিম আহত হন। এই ঘটনার প্রতিবাদে মাদ্রাসার প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদের ব্যানারে গতকাল দুপুরে প্রতিবাদ ও মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। বেলা ১১ টার দিকে শুরু হওয়া মানববন্ধনে বেলা সাড়ে এগারটার দিকে হঠাৎ ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত প্রকাশ্যে আগ্নেঅস্ত্র, হকিস্টিক, লোহার রড হাতে হামলা করে। ব্যানার কেড়ে নিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মারধর করে। পরে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়ে য়ায় দুর্বৃত্তরা। যার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। এদিকে মানববন্ধনে হামলার ঘটনার পর পর উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা মিছিল সহকারে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মদুনাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ করে সড়ক অবরোধ করে। বেলা দেড়টার দিকে মদুনাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক মুহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ফিরে যায়।
মানববন্ধনের আয়োজক বুড়িশ্চর জিয়াউল উলুম কামিল মাদ্রাসার সাবেক–বর্তমান শিক্ষার্থী পরিষদের সমন্বয়ক এনামুল করিম বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে একটি চক্র মাদ্রাসাটিতে অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রশাসনকে এসব ঘটনা খতিয়ে দেখে অবিলম্বে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জোর দাবি জানান তিনি।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম ফরিদ উদ্দিন বলেন, এই মাদ্রাসাটিকে ধ্বংস করতে একটি চক্র ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম–দুর্নীতি এবং স্বেছাচারিতার কোনো অভিযোগ নেই। শুধু মাত্র ঈর্ষান্বিত হয়ে ওই চক্রটি মাদ্রাসার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
মদুনাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক আশরাফ উদ্দিন জানান, মাদ্রাসার একটি পক্ষ অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি করছে। তারা গত বৃহস্পতিবার এ ব্যাপারে একটি মানববন্ধন করেছিলো। গতকাল রোববার আরেকটি পক্ষ সেই ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করে। ওই সময় অন্য পক্ষ তাদের বাধা দেয়। উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। মানববন্ধন চলাকালে গোলাগুলির ঘটনা তিনি জানেন না বলে জানান। পরে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা ফিরে যায়। লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।