বীরেন্দ্রনাথ শাসমল – বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ও বিপ্লবী রাজনৈতিক নেতা। দেশপ্রেমের উদ্দীপনা, সামাজিক দায়বদ্ধতা ও অঙ্গীকারের চেতনায় তিনি ছিলেন সমর্পিত। দেশবাসী তাঁকে ‘দেশপ্রাণ’ উপাধিতে ভূষিত করে। আজ তাঁর ৮৪তম মৃত্যুবার্ষিকী।
নির্ভিক স্বদেশপ্রেমী বীরেন্দ্রনাথ শাসমলের জন্ম ১৮৮১ সালের ১৪ অক্টোবর মেদিনীপুরের চণ্ডিভেটী প্রামে। ১৯০৫ সালে লন্ডন থেকে ব্যারিস্টারি ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরে প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট এবং পরবর্তী সময়ে মেদিনীপুর জেলা কোর্টে কাজ করেন। নিজের মেধা, মনন, শক্তি ও সম্ভাবনাকে তিনি কাজে লাগিয়েছেন দেশ সেবায়। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন মামলায় বিনা পারিশ্রমিকে তিনি আসামিপক্ষের হয়ে কাজ করেছেন। এছাড়া ডগলাস হত্যা মামলায়ও আসামিপক্ষের উকিল ছিলেন তিনি। বিত্ত-বৈভবের প্রতি কোনো মোহ ছিল না তাঁর। তাই দেশ সেবায় নিজেকে নিবেদন করতে ১৯২১ সালে কংগ্রেসের ডাকে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন, ছেড়ে দেন আইন ব্যবসা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে ব্রিটিশ যুবরাজের ভারত সফরকে কেন্দ্র করে বয়কট আন্দোলন পরিচালনার জন্য অন্যান্য বিপ্লবীর সাথে বীরেন্দ্রনাথ শাসমলও গ্রেফতার হন। মুক্তি লাভের পর যোগ দেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের স্বরাজ্য দলে।
বিভিন্ন সময়ে বীরেন্দ্রনাথ মেদিনীপুর জেলা বোর্ডের চেয়্যারম্যান, বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সভ্য এবং প্রাদেশিক কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। তবে ১৯২৭ সালে তাঁর বিরুদ্ধে কংগ্রেস অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করলে তিনি পার্টি ছেড়ে দেন।
১৯৩৩ সালে কংগ্রেস বিরোধী প্রার্থী হিসেবে কলকাতা কর্পোরেশনের কাউন্সিলর হয়েছিলেন তিনি। পরের বছর ভারতীয় আইন সভার সভ্য নির্বাচিত হন। এই নির্বাচনের পাঁচ দিন পর ১৯৩৪ সালের ২৪ নভেম্বর বীরেন্দ্রনাথ শাসমল প্রয়াত হন।