সাতকানিয়ায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মাদ্রাসা ছাত্রীকে বাল্যবিয়ে দেয়ার চেষ্টাকালে বরসহ তিনজনকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো বাল্যবিয়ের বর মুজিবুর রহমান (৩০), বরের বাবা মো. নুরুন্নবী (৬০) ও মেয়ের বাবা মো. ইয়াকুব মিয়া (৪৫)।
এসময় ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে বিয়ের কাজী মাহাবুবুল আলম।
গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার এওচিয়ার চুড়ামনি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এওচিয়া ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মানিক জানান, ঘটনার দিন দুপুরে বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ইলশার মো. নুরুন্নবীর পুত্র মুজিবুর রহমানের সাথে এওচিয়ার হালুয়া ঘোনার মো. ইয়াকুব মিয়ার মেয়ে ও দক্ষিণ কাঞ্চনা শাহ রশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীর আকদ ও কাবিনের আয়োজন করা হয়।
এওচিয়া এলাকায় দায়িত্বরত কাজী বাল্যবিয়ে করাতে রাজি না হওয়ায় তারা বর-কনে, তাদের পরিবারর সদস্য ও আত্মীয়-স্বজন নিয়ে কাঞ্চনার জোট পুকুরিয়া এলাকায় যায়।
কাঞ্চনা এলাকার কাজী মাহাবুবুল আলম জোট পুকুরিয়া এলাকায় তাদের বিয়ের আয়োজন করে।
ইউপি চেয়ারম্যান আরো বলেন, “বাল্যবিয়ের আয়োজনের বিষয়টি জানতে পেরে আমি কাঞ্চনার জোট পুকুরিয়া এলাকায় আমাদের ইউপি সদস্য মো. ইউসুফকে সেখানে পাঠাই। তখন কনের জন্ম নিবন্ধনসহ অন্যান্য কাগজপত্র দেখতে চাইলে কাজী মাহাবুবুল আলম ও বর-কনে পক্ষের লোকজন ইউপি সদস্যের সাথে খারাপ আচরণ করে। এক পর্যায়ে তারা ইউপি সদস্যকে ধাক্কা দেয়। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গেলে তারা দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যায়। পরে তারা বিকালে চুড়ামনি এলাকায় একটি মাদ্রাসায় বসে বাল্যবিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছিল। খবর পেয়ে আমি দ্রুত সেখানে গিয়ে তাদেরকে আটক করি। এরই মধ্যে কাঞ্চনা থেকে আসা বিয়ের কাজী দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে বিষয়টি সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামকে জানালে পুলিশসহ তিনি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে বাল্যবিয়ের চেষ্টার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর বর, বরের বাবা ও মেয়ের বাবাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করেন।”
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম জানান, বাল্যবিয়ের চেষ্টা করায় বরসহ তিনজনকে ৬ মাসের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। এই বাল্যবিয়ের আয়োজনের সাথে সম্পৃক্ত থাকা কাঞ্চনা ইউনিয়নের কাজী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে। তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
