বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় বাড়িতে ঢুকে এক কলেজ ছাত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে। গাজীপুরের এ ঘটনায় নিহতের মা ও ছোট বোন আহত হয়েছেন। গত সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় তাকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মহানগরের দক্ষিণ সালনা এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে গাজীপুর মহানগরের সদর থানার এসআই আবু সাঈদ জানান। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ২১ বছর বয়সি এই তরুণী গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজ থেকে গত বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। সম্প্রতি তিনি পড়াশোনা করতে ইউরোপের কোনো একটি দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। নিহত মেয়েটির মা (৪৫) এবং ছোট বোন (১৪) রাজধানীর উত্তরা শিন শিন জাপান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। খবর বিডিনিউজের।
পুলিশ বলছে, সাইদুল ইসলাম (২৫) নামের এক যুবক এ হামলা চালিয়েছে। সাইদুল ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার মহেশতারা গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বাবা–মার সঙ্গে দক্ষিণ সালনা এলাকায় বসবাস করেন। নিহতের পরিবারের বরাতে এসআই আবু সাঈদ জানান, নিহত কলেজছাত্রী ও তার ছোট বোনকে কোরআন শিক্ষা দিতেন গৃহশিক্ষক সাইদুল। নিয়মিত বাসায় যাওয়ার মধ্যে এক পর্যায়ে বড় মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেন সাইদুল। বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সাইদুলকে বাসায় আসতে নিষেধ করা হয়। এরপর সাইদুল ওই মেয়েকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। বিষয়টি সাইদুলের বাবা–মাকে জানানো হলেও কোনো সুরাহা হয়নি।
এসআই আবু সাঈদ জানান, লেখাপড়ার পাশাপাশি মেয়েটি সম্প্রতি মহানগরের তেলিপাড়ায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। কর্মস্থলে আসা যাওয়ার পথে তাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন সাইদুল। উত্ত্যক্তের বিষয়টি মেয়েটি তার বাবা–মাকে জানালে সাইদুলকে পুনরায় নিষেধ করা হয়। তখন সাইদুল এ ছাত্রীর প্রাণনাশের হুমকি দেন। গত সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মেয়েটির বাড়ির প্রধান গেট খোলা পেয়ে সাইদুল ঘরে ঢুকে মেয়েটিকে ছুরি দিয়ে মাথা, গলা, পা ও হাতে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকেন। এ সময় মেয়েটির চিৎকার শুনে তার মা ও ছোট বোন দৌড়ে গেলে তাদেরকেও কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যান সাইদুল।
গুরুতর অবস্থায় প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক বড় মেয়েকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে জানিয়ে এসআই আবু সাঈদ জানান, আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।