বিয়ের ক্ষেত্রে বয়সের ব্যবধান নির্ধারিত করা চাই

জেসমিন সুলতানা চৌধুরী | রবিবার , ১৭ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:০৯ পূর্বাহ্ণ

বিয়ের জন্য সঠিক বা নির্দিষ্ট কোনো বয়সের ব্যবধান আমাদের দেশে নির্ধারণ করা নেই। তাই অনেক ক্ষেত্রে অভিভাবকের ইচ্ছায় আবার অনেক ক্ষেত্রে অনিচ্ছায় বিয়ে হচ্ছে। যার ফল ভোগ করছে বিশেষত মেয়েরাই। বিয়ের জন্য নারী-পুরুষের বয়সের ব্যবধানকে গুরুত্ব দেয়ার সময় এসেছে বলে মনে করি। এ ব্যাপারে যতদিন পর্যন্ত না আইন হবে এবং যথাযথভাবে সেই আইনের প্রয়োগ না হবে ততদিন পর্যন্ত এ অত্যাচার বন্ধ হবে না। একজন কিশোরী মেয়ের সাথে যদি ত্রিশ/পঁয়ত্রিশের অধিক বয়সের পুরুষের বিয়ে হয় সেটা ধর্ষণ ছাড়া আর কিছুই নয়। ঐ বয়সী মেয়েরা পরিপূর্ণ না হওয়ার কারণে স্বামীর প্রয়োজন সঠিকভাবে বোঝে না এবং তা পূরণ করতে সক্ষমও হয় না। ফলে পুরুষ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে এবং সেখান থেকে সে কখনো আর ফিরে আসে না। ঐ কিশোরী যখন ধীরে ধীরে যুবতী হয় তখন সে স্বামীকে আর আপন করে পায় না। সেই সংসারে নিত্য অশান্তি লেগে থাকে এবং ভাঙন ধরে। যদিও টিকে থাকে, না থাকে সুখ, না থাকে শান্তি। সাধারণত মেয়েদের পছন্দ তার জীবনসঙ্গী তার চেয়ে অল্প কয়েক বছরের বড় হোক। আজকাল শিক্ষিত সমাজে নিজেদের পছন্দে সমবয়সী ছেলে-মেয়ের বিয়ে হচ্ছে। আবার উপযুক্ত মেয়ে অধিক বয়সী পুরুষকে বিয়ে করছে। সেটা ভিন্ন ব্যাপার। তবে বয়সের উপযুক্ত ব্যবধান সম্পর্ক ভালো রাখে এবং সংসার জীবনে ঝগড়া, বিবাদ, ভুল বোঝাবুঝি কম হয়। দুজনের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া থাকলে সে সম্পর্ক অটুটভাবে ধরে রাখা যায় । বয়সের অল্প (৫-১০) ব্যবধানই বিয়ের জন্য আদর্শ বলে মনে হয়। কারণ এতে করে একে অপরকে খুব কাছে থেকে বোঝা সম্ভব হয়। ফলে সম্পর্ক হৃদ্যতাপূর্ণ হয়। বয়সের ব্যবধান যত বেশি হয় দম্পতিরা তত বেশি সমস্যার মুখোমুখি হয়। বয়সের অতিরিক্ত ব্যবধান অনেকটাই প্রভাব ফেলে সংসার জীবনে। কারণ এতে মতামতের বিশাল পার্থক্য থাকে। যেমন- বয়সের অধিক ব্যবধান হলে স্ত্রী স্বামীর ওপরে কোনো কথা বলতে পারে না। কোনো বিষয়ে কোনো মতামত ব্যক্ত করতে পারে না, আর করলেও গুরুত্ব দেয়া হয় না। লক্ষ্য, উদ্দেশ্যে এবং মতামতের ব্যাপক পরিবর্তনের কারণে না থাকে শ্রদ্ধাবোধ, না থাকে সম্মানবোধ, না থাকে ভালোবাসা, না থাকে স্থিতিশীলতা। সব থেকে বড় সমস্যা হয় সন্তান নেয়ার ক্ষেত্রে। বয়স্ক স্বামী দ্রুত সন্তান নিতে চায়, আর কিশোরী স্ত্রী আগ্রহী হয় না। যেহেতু তার মতামতের কোনো গুরুত্ব নেই তাই মা হতেই হয়। ফলে তার মানসিক স্বাস্থ্য এবং শারীরিক স্বাস্থ্য উভয়ই ভেঙ্গে পড়ে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিদ্যালয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ করা উচিত
পরবর্তী নিবন্ধসিয়াম ও তাকওয়া