সীতাকুণ্ডের বিএম কন্টেনার ডিপোতে আগুন লাগার রহস্য উদঘাটনে ডিপোর সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ওই ডিপোতে ৩২টি আইপি ক্যামেরাসহ ১১৮টি সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল। এসব ক্যামেরার তথ্য সংরক্ষিত হতো ১০টি ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডিং (ডিভিআর) মেশিনে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিআইডির একটি দল ডিভিআর মেশিনগুলো জব্দ করে।
সিআইডি চট্টগ্রামের পরিদর্শক মোহাম্মদ শরীফ জানান, সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে আগুন লাগার কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। কারণ শনাক্ত করতে একাধিক টিম কাজ করছে। আমরাও চেষ্টা করছি ডিজিটাল কোনো এভিডেন্স জোগাড় করা যায় কিনা। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডের সময় আইটি কক্ষটি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ডিপোতে ১১৮টির মতো সিসিটিভি ছিল। সেগুলোতে ধারণকৃত ভিডিও আইটি কক্ষে থাকা ১০টি ডিভিআর মেশিনে জমা হতো। মেশিনগুলোর অধিকাংশই পুড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে সেখান থেকে কোনো ফুটেজ পাওয়া যায় কিনা সে চেষ্টায় আমরা মেশিনগুলো জব্দ করে সীতাকুণ্ড থানা হেফাজতে দিয়েছি।
এদিন সকালে সিআইডির চার সদস্যের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। পুরো এলাকা ঘুরে দেখার পাশাপাশি ডিপোর দুর্ঘটনাস্থল নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছে দলের সদস্যরা।
এদিকে কন্টেনার ডিপোর ভেতরে চলছে ধ্বংসস্তূপ সরানো ও ধোয়ামোছার কাজ। ডিপো কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব লোকবল ও যন্ত্রপাতি দিয়ে এগুলো সরাচ্ছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, পোড়া ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে পুরোপুরি কাজের উপযোগী করতে বেশ কিছুদিন সময় লেগে যাবে।
গত ৪ জুন রাত ৯টার দিকে বিএম কন্টেনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের পর একের পর এক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। রাত সাড়ে ১০টার পর আগুনের খবর ছড়িয়ে পড়ে চট্টগ্রামসহ দেশের সর্বত্র। রাত ১২টার পর থেকে একের পর এক মৃতের সংবাদ আসতে থাকে। সময় যত গড়াতে থাকে, মৃতের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। এ দুর্ঘটনায় সর্বশেষ ৪৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৪৬ জনের মধ্যে ২৭ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। এসব মরদেহ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনো ১৯ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় হতাহতের বেশিরভাগই ফায়ার সার্ভিস কর্মী, ডিপোর শ্রমিক–কর্মচারী, কন্টেনারবাহী গাড়ির চালক–সহকারী ও শ্রমিক। রাসায়নিকের কারণে ছড়িয়ে পড়া ওই আগুন ৮৬ ঘণ্টা পর বিভিন্ন বাহিনীর চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসে।