এবারের বিপিএলের শুরু থেকেই রানের বন্যা বইয়ে যাচ্ছে। আগে মিরপুর স্টেডিয়ামের বদনাম থাকলেও এবারে যেন মনে হচ্ছে একেবারে বিপরীতে অবস্থান করছে মিরপুরের উইকেট। গত সোমবার উদ্বোধনী ম্যাচে ১৯৭ রান করেও এক দলের হার আর দ্বিতীয় ম্যাচে এক দলের স্কোর ১৯১। তৃতীয় ম্যাচেই দুইশ রানের দেখা। চার ম্যাচে ছক্কা ৭৪টি, চার ১০৯টি। এমন ছক্কা–বৃষ্টি আর রানের জোয়ারে বিপিএলের শুরু হয়নি আগে কখনোই। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ বললেন, এবার ভালো ব্যাটিং উইকেট তৈরির জোর নির্দেশনা ছিল তাদের পক্ষ থেকে। বিপিএলে রানের খরা নিয়ে আলোচনা হয়ে আসছে নিয়মিতই। বিশেষ করে, মিরপুর শের–ই–বাংলা স্টেডিয়ামে মন্থর, নিচু বাউন্সের উইকেট টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটের উপযোগী নয় বলে তুমুল সমালোচনা হয়েছে অনেকবার। উইকেট নিয়ে সমালোচনা করায় একবার মোটা অঙ্কের জরিমানা করা হয়েছিল তামিম ইকবালকে। বিদেশি ক্রিকেটারদের অনেকেও মিরপুরের উইকেট নিয়ে অসন্তোষের কথা বলেছেন অনেকবার। এবার বিসিবিতে পালাবদলের পথ ধরে সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার কিছুদিন পর ফারুক আহমেদ বলেছিলেন, বিপিএলের উইকেটে এবার বিশেষ নজর থাকবে তাদের। সেই দৃষ্টি দেওয়ার প্রতিফলনই যেন পড়ছে আসরের শুরুতে।
ম্যাচপ্রতি এবার এখনও পর্যন্ত ছক্কা হয়েছে ১৮.৫টি। যদিও মাত্রই শুরু বিপিএল। তার পরও এ পরিসংখ্যান বেশ নজরকাড়া। বিপিএলে এক আসরে ম্যাচপ্রতি ছক্কা সবচেয়ে বেশি হয়েছে ২০১৯–২০ টুর্নামেন্টে। সেবার ৪৬ ম্যাচে ৬২১টি ছক্কা হয়েছিল, ম্যাচপ্রতি ছক্কা ছিল ১৩.৫টি। এবার ছক্কা বেশি হওয়ার একটা কারণ, মাঠের সীমানা ছোট করে দেওয়া। তবে উইকেট যে এবার এখনও পর্যন্ত অনেক ব্যাটিং সহায়ক, এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। যদিও মাত্রই দুটি দিন আর চারটি ম্যাচ হয়েছে। মন্তব্য করার জন্য যথেষ্ট সময় এখনও হয়নি। তবে শুরুটা অন্তত আশা জাগানিয়া। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে গতকাল বুধবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিসিবি সভাপতি বলেন কিউরেটরের কাছে নির্দেশনায় আগের চেয়ে এবারের পার্থক্য ছিল। আসলে অনেক সময় হয় কী, নির্দেশনাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এক জায়গা থেকে তিন–চার রকম নির্দেশনা গেলে কিউরেটরের জন্যও কাজটা কঠিন। আমি চিন্তা করেছি এবার দেখতে চাই ভালো ব্যাটিং উইকেট। আবার বাউন্সও আছে উইকেটে। এই ধরনের উইকেটে খেলা প্রয়োজন। এতে করে বোলাররাও শিখবে, কিভাবে ভালো ব্যাটিং উইকেটে বল করা যায়। ব্যাটসম্যানরা তো শিখবেই। অনেক সময় নিচু বাউন্সের উইকেটে শর্ট অব লেংথ বল করে পার পাওয়া যায়। কিন্তু ট্রু বাউন্সের উইকেটে সেটা হয় না। ব্যাটসম্যান আর বোলার জন্যই এটা ভালো। তাই নির্দেশনা ছিল ভালো ব্যাটিং উইকেটের। আবার বোলাররাও কিন্তু মুভমেন্ট পেয়েছে, চারটি ম্যাচে যা দেখেছি। বোলাররাও উইকেট কাজে লাগাতে পারলে খারাপ না। তবে বাউন্স সমান রাখতে বলেছি। তবে উইকেটের সঙ্গে আবহাওয়ার যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে, সেটিও মনে করিয়ে দিলেন ফারুক আহমেদ। তিনি বলেণ আজকে যেমন ঘোলাটে একটা দিন। সারাদিন যদি রোদ না ওঠে, তাহলে কালকে উইকেট ওরকম নাও পেতে পারেন। এগুলো সবারই বুঝলে সুবিধা। তবে নির্দেশনা ছিল ভালো ব্যাটিং উইকেটে খেলতে চাই আমরা।