বিষণ্নতার প্রথম স্তর আলেয়া আরমিন আলো

| সোমবার , ১ ডিসেম্বর, ২০২৫ at ৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ

অভিমানকে অনেকেই রাগের সাথে গুলিয়ে ফেলে। রাগ তো প্রকাশের মাধ্যমে সবার গোচরে চলেই আসে। কিন্তু অভিমান হৃদয়ে লুকায়িত জমাট মেঘের মতো কিছু একান্ত কষ্ট। যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই রাগের আকার ধারণ করে না। বরং বাঁপাঁজরে বরফ শীতল ব্যথায় জমে থাকে দিনের পর দিন। জমাটকৃত মেঘমল্লার মতো হৃৎপিণ্ডকে ঝাপসা আঁধারে বিষণ্‌ণতায় ধূমায়িত করে। অথচ অভিমান ভীষণ আদুরে একটি শব্দ। অভিমানের গুরুত্ব ও প্রকাশে সম্পর্কে অনুরাগের সৃষ্টি হয়। জন্ম হয় নতুন প্রেমের মুকুল। কিন্তু অভিমান কেউ নিজ থেকে প্রকাশ করলে তার সৌন্দর্য হারায়। বরং প্রিয়জনকেই কাছের মানুষটির অভিমান বুঝে নিতে হয়। তাহলেই সম্পর্কের সুন্দরতায় নতুনত্ব ফিরে আসে।

আসলে, কখনো কখনো অভিমান গুরুত্ব না পেয়ে ভীষণ রকমের ভারি এক আবেগ হয়ে উঠে। যে আবেগ সবার কাছে প্রকাশ করা যায় না। অনেকক্ষেত্রে অভিমান শব্দে কিংবা কথায় প্রকাশ করার ইচ্ছেটাও মরে যায়। তবু মাঝেমধ্যে ইচ্ছে করে কেউ সেই অব্যক্ত আবেগটুকু বুঝুক। তবে আফসোস! আজকাল অভিমানকে অবান্তর ন্যাকামো ভেবে কেউই আর তেমন পাত্তা দেয় না। শোনে না অভিমানীর কোনো আবদার। এত সময় এখন যেন কারো হাতেই নেই; নেই অভিমানীকে গুরুত্ব দেয়ার ইচ্ছাটুকুও। বুকের ভেতরে, গহীন থেকে গহীনেঅভিমানেরা তাই একাকিত্বেই গুটিয়ে থাকে নীরব আক্ষেপে। এভাবেই অনুযোগহীন পথ চলতে চলতেই হয়তো একদিন সূর্যাস্তের মতো নিভেও যায় কতশত অভিমানী প্রাণ।

তাই সময় থাকতে প্রিয়জনের অভিমানের গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, অভিমান হলো বিষণ্‌ণতার প্রথম স্তর। সময়মতো অভিমান ভাঙতে পারলে প্রিয় মানুষটিকে বিষণ্‌ণতার অন্ধকার থেকে ফিরানো সম্ভব। নইলে নীরব থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে নিরাশা ও হতাশার স্তর ভেদ করে প্রিয় মানুষটি সকলের অজান্তেই পৌঁছে যায় ডিপ্রেশন নামের ভয়ানক এক মানসিক রোগের দ্বারপ্রান্তে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতারামন বিবি বীর প্রতীক : এক সাহসী নারীর পথিকৃৎ
পরবর্তী নিবন্ধ‘আপনা-মাঝে শক্তি ধরো নিজেরে করো জয়’