বিশ্ব-ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর খুনিরা চিরকাল ঘৃণিত হয়ে থাকবে : ড. অনুপম সেন

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ১৬ আগস্ট, ২০২২ at ১০:২১ পূর্বাহ্ণ

বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার মধ্য দিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালন করেছে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি।
সপ্তাহব্যাপী ‘শোকাহত বাংলাদেশ’ শীর্ষক চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর সমাপনীরও আয়োজন করা হয় গতকাল। বিকেল ৩টায় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির দামপাড়াস্থ কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন। অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী শামীম সুলতানা, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য বোরহানুল হাসান চৌধুরী, ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়’ শীর্ষক তথ্যচিত্রের পরিচালক সৈয়দ সাবাব আলী আরজু। ট্রেজারার ও ‘শোকাহত বাংলাদেশ’ শীর্ষক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর একেএম তফজল হক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এ সময় প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছে। তাই আগস্ট হলো বাংলার আকাশ-বাতাস ও প্রকৃতির অশ্রুসিক্ত হওয়ার মাস। পাকিস্তানপন্থি একদল দুর্বৃত্ত সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশকে করেছে কলঙ্কিত। এই কলঙ্ক অমোচনীয়। বিশ্ব-ইতিহাসে এই দুর্বৃত্তরা চিরকাল ঘৃণিত হয়ে থাকবে। তিনি বঙ্গবন্ধুর আন্দোলন-সংগ্রামের ইতিহাস বর্ণনা করেন। তিনি আরও বলেন, ১৯৭৫ সালে পাকিস্তানপন্থী-প্রতিক্রিয়া-শক্তি পাকিস্তান-ফেরত সামরিক ও বেসামরিক আমলাতন্ত্রের সাহায্য নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে কেবলমাত্র সপরিবারে হত্যাই করেনি, একই সঙ্গে বাংলাদেশকেও পশ্চাদমুখী প্রতিক্রিয়ার অন্ধকারে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এই প্রতিক্রিয়াচক্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের সব মহতী-অর্জন ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও বাঙালি জাতীয়তাবাদকে গণমানুষ ও গণজীবন থেকে সম্পূর্ণরূপে মুছে ফেলতে প্রচেষ্টা চালায়। উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী শামীম সুলতানা বলেন, বিশ্বের গুটিকয়েক স্বাধীনতা অর্জনকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। বঙ্গবন্ধু স্বাধীন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের নাম ইতিহাসে সোনার হরফে লিখে গেছেন। প্রবাদ আছে, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। আমরা দেখছি, বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা সেই স্বাধীনতা রক্ষার কাজটি করে চলেছেন। বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য বোরহানুল হাসান চৌধুরী বলেন, হাজার বছরের সাধনা ও সংগ্রামের ফসল স্বাধীন বাংলাদেশ। ক্ষুদিরাম ও সূর্য সেন থেকে শুরু করে অনেক মহামানব ধাপে ধাপে এই স্বাধীনতা সংগ্রামকে এগিয়ে নিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৭ থেকে ধারাবাহিক সংগ্রামের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার ডাক দেন এবং দীর্ঘ নয় মাস মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন করেন। অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ সাবাব আলী আরজু তার পরিচালনায় নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়’ শীর্ষক তথ্যচিত্র নির্মাণের ইতিহাস বর্ণনা করে বলেন, এই তথ্যচিত্র নির্মাণের জন্য বিভিন্ন দেশের আর্কাইভ ও পত্র-পত্রিকা থেকে প্রচুর তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। সভাপতির বক্তব্যে ট্রেজারার প্রফেসর একেএম তফজল হক বলেন, বাংলাদেশের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা ছিল অন্তহীন। মুক্তিযুদ্ধের সময় বঙ্গবন্ধু যখন পাকিস্তানের কারাগারে ছিলেন, তখন তাদের বলেছিলেন, তোমরা যদি আমাকে হত্যা কর, তবে আমার লাশটি বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিও। বাংলাদেশের স্বার্থে তিনি মৃত্যুকেও পরোয়া করেননি। অনুষ্ঠানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। শেষে সৈয়দ সাবাব আলী আরজু পরিচালিত ও সৈয়দ আশিক রহমান প্রযোজিত ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবন ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়’ শীর্ষক তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশিশুদের টিকা দেওয়া হবে নির্ধারিত স্কুলে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধজ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যোর ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ