শীতের আগে নতুন করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াল একটি মাস পার করল বিশ্ব, যার ফলে আক্রান্তের সংখ্যা ৫ কোটি ছাড়িয়ে গেছে। গতকাল রোববার বাংলাদেশ সময় রাতে বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ৫ কোটিতে উন্নীত করে জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটি। রয়টার্স জানিয়েছে, গত ডিসেম্বর চীনের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ার পর সদ্য পেরিয়ে আসা অক্টোবরেই সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। এই সংখ্যা মোট আক্রান্তের সংখ্যার এক-চতুর্থাংশ। খবর বিডিনিউজের।
গত অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়তে থাকে। দৈনিক ১ লাখ রোগী শনাক্তের ঘটনা এই মাসেই দেশটিতে ঘটেছিল, যা বিশ্বেও প্রথম। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এই অক্টোবরেই ইউরোপেও রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, যা সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ৫ কোটি হওয়ায় ভূমিকা রেখেছে। মহামারীর এক বছর না গড়াতেই বিশ্বে মৃতের সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আক্রান্তদের মধ্যে ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন সোয়া ৩ কোটি মানুষ। বছরের শুরুতে ইউরোপকে বিপর্যস্ত করে করোনা হানা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে। গরমের সময় সংক্রমণ কিছুটা কমে এলেও শীত ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে আবার বাড়ছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, সংখ্যার হিসাব চলতি নভেম্বরও ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা জাগাচ্ছে। কেননা এই মাসের প্রথম সপ্তাহে গড়ে প্রতি দিন ৫ লাখ ৪০ হাজার জন আক্রান্ত হচ্ছে। শীতের শুরুতে আক্রান্তের হার কতটা বাড়ছে, তা বোঝা যাবে ছোট্ট একটা হিসাবেই। আক্রান্তের সংখ্যা ৩ কোটি থেকে চার কোটিতে যেতে যেখানে লেগেছিল ৩২ দিন, সেখানে সর্বশেষ এক কোটি বাড়তে লাগল ২১ দিন। আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ১ কোটি ২০ লাখ ইউরোপে। বিশ্বে মোট মৃত্যুর ২৪ শতাংশই এই মহাদেশের। ইউরোপে এখন প্রতি তিন দিনে ১০ লাখের মতো রোগী শনাক্ত হচ্ছে, যা বিশ্বে এই সময়ে আক্রান্তের মোট সংখ্যার অর্ধেকের বেশি। ফ্রান্সে গত সপ্তাহে গড়ে প্রতি দিন ৫৪ হাজারের মতো আক্রান্ত হয়েছে, যা ভারতের চেয়ে বেশি। সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে লকডাউনসহ বিধিনিষেধের কড়াকড়ি আবার ফিরিয়ে আনছে।
রোগীর সংখ্যা বিচারে এখনও বিশ্বে শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৯৮ লাখ ছাড়িয়েছে, যা বিশ্বের মোট রোগীর ২০ শতাংশ। নির্বাচনের পর গত চার দিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিদিন লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনিবার শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৩০ হাজার। যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি রোগী ভারতে, সংখ্যাটি ৮৫ লাখের বেশি। দুর্গাপূজার পর আক্রান্তের সংখ্যা সেখানে প্রতিদিন ৪৬ হাজার করে বাড়ছে। ভারতের পরে রয়েছে ব্রাজিল, আক্রান্তের সংখ্যা ৫৬ লাখের বেশি। তারপরে রয়েছে রাশিয়া (সাড়ে ১৭ লাখ), ফ্রান্স (১৭ লাখ), স্পেন (১৩ লাখ), আর্জেন্টিনা (১২ লাখ) ও যুক্তরাজ্য (১২ লাখ)। মৃতের সংখ্যায়ও সবার উপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে ইতোমধ্যে ২ লাখ ৩৭ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। তারপর রয়েছে ব্রাজিল (১ লাখ ৬২ হাজার), ভারত (১ লাখ ২৬ হাজার), মেঙিকো (৯৪ হাজার), যুক্তরাজ্য (৪৯ হাজার), ইতালি (৪১ হাজার), ফ্রান্স (৪০ হাজার)।












