বিশ্বাসের বন্ধনে বাঁধা, ভালোবাসার পথে চলা!

রাজু আহমেদ | সোমবার , ১২ মে, ২০২৫ at ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ

যে মানুষগুলো যেকোনো ভাবে আপনার জীবনের গল্পের সাথে জড়িয়ে গেছে, জীবন থেকে তাদরকে আর উড়ে যেতে দিবেন না। অবহেলা কিংবা অপমান করে তাড়িয়ে দিয়েন না। আঘাত করে আপনাকে ছেড়ে যেতেও বাধ্য করবেন না। যিনি প্রিয়জন তাকে প্রিয়তমের জায়গাতেই রাখুন। বন্ধু বা সুজন কোনদিন যেনো শত্রুতে পরিণত হতে না পারে, শত্রু হওয়ার ষড়যন্ত্র না করেসেজন্য যতটুকু চেষ্টা আপনার থাকা উচিত ততটুকুতে একটুও কার্পণ্য দেখাবেন না। এখানে বিশ্বস্ত মানুষের ছায়া পাওয়া মুশকিল। আশেপাশে যারা ঘোরে তাদের অনেকেই স্বার্থ হাসিলের ছক নিয়ে অপেক্ষায় আছে। কাজেই যারা পরীক্ষিত তাদেরকে কোনোভাবেই দূরে ঠেলবেন না।

ভালো থাকার জন্য ছাড় দেওয়া জরুরি। সবাইকে আগলে রাখার জন্য বিনীত হতেই হবে। অভিযোগ না কমিয়ে কেবল খুঁত খুঁজলে মানুষের মনে জায়গা পাওয়া যায় না। অন্যের মনে নিজের জায়গা করতে ভালোবাসতে হয় এবং বিশ্বস্ত থাকতে হয়। কাউকে বাধ্য করা আর কারো মন জিতে নেওয়াএ দু’য়ের ফারাক যতদিনে বুঝতে সক্ষম না হবেন ততদিন ছলনার জালে ফাঁসতেই হবে। ভালোবাসা দিয়ে তবেই তা পাওয়ার আশা করা যায়। কেবল শাসন করলে মন খারাপের ঝাঁপি খুলবে। যেখানে ক্ষত হয়েছে সেখানে যত্ন না নিলে, যে দূরত্বে দাঁড়িয়ে আছে তাকে কাছে না টানলে কিংবা যে ভুল বুঝেছে তার ভুল না ভাঙালে জীবন থেকে হাসি হারিয়ে যায়। সঙ্গ ছাড়া মানুষের জীবন পূর্ণ হয় না।

এই জীবনে নির্দিষ্ট খাতে খাতে বিশেষ বিশেষ মানুষের আবাস থাকে। বাছবিচারহীন অনেক বেশি বন্ধু, অনৈতিকভাবে পোষা একাধিক প্রিয়জনবিপত্তির কারণ হবে। যাদের সাথে দেখা হয়, যাদের সাথে বসা হয় কিংবা যাদেরকে ভাবা হয় তাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস রক্ষা করেছে তারাই বন্ধু। বন্ধুত্বে বয়স বাধা নয়। যে একজন নির্দিষ্ট মানুষ আমার প্রকাশ্যগোপন জানে, জমাকৃত সুখদুঃখ যার সাথে ভাগাভাগি হয় কিংবা যার উপস্থিতিতে মনের অবস্থা ভালো থাকেসেই প্রিয়জনের সামনে/পিছনে কখনোই মিথ্যার ছলনাতে দাঁড়ানো ঠিক নয়। যেখানে প্রতিশ্রুতি থাকে সেখানে বিশ্বাসঘাতকতার মতো পাপ কখনোই মোড়কমুক্ত করা কাম্য নয়। তাতে নিজেরই বড় ক্ষতি হবে।

প্রিয় মানুষগুলোকে আঁকড়ে ধরে বাঁচার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পরিবারের মতো নিরাপদ আশ্রয় এই দুনিয়াতে দ্বিতীয়টি নাই। সুদিনে তাদেরকে ছেড়ে দিলে, কোনো লোভে তাদেরকে ভুলে গেলে কিংবা কোনো মোহে তাদেরকে আঘাত করলে সে আঘাত দ্বিগুণ হয়ে ফেরত আসবে। যে আপনাকে ঠকায়নি তাকে ঠকানোর চিন্তার কথা কল্পনাও করা যাবে না। যারা আঘাত দিয়েছে তাদেরকেও সুযোগ থাকলে ক্ষমা করে দেওয়া সর্বোতভাবেই উত্তম। দুনিয়ার দুদিনে শত্রুসংখ্যা বাড়িয়ে কোনো ফায়দা নাই বরং বিপত্তির শঙ্কা চরমে ওঠে।

যাকে ভালোবেসেছেন, যাদেরকে বিশ্বাস করেছেন কিংবা যাদেরকে চিন্তায় পুষেছেন তাদেরকে কখনোই ছেড়ে যাবেন না। শক্ত করে জুড়ে ও জড়িয়ে থাকুন। যদি তারা ছেড়ে দেয়, ভুলে যায় তবে সেটা ভিন্ন আলোচনা। তবে ঘিরে থাকা ও রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকতে হবে। যে আমার শরীরের গন্ধ জানেখুব সহজে চাইবো নাসে আমায় ভুলতে পারুক। তাকে জীবনের সাথে জড়িয়ে রাখার জন্য ত্যাগ করতে হলে, নত হতে হলে কিংবা ভুল স্বীকার করতে হলেতাই করা উচিত। জুড়ে থাকার মধ্যে বাহাদুরি আছে, ছেড়ে যাওয়ার মধ্যে সংকীর্ণতা। যে পাখি মুক্ত হয়ে যায় মায়ার টানে দিন ফুরালে সেও আবার নীড়ের দিকে ফেরে যদি ঠিকঠাক মায়া জন্মায়। কাজেই অপেক্ষাতেও আশাবাদী থাকা জরুরি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাশেদ রউফ – এর অন্ত্যমিল
পরবর্তী নিবন্ধএকজন ঘিনুয়া এবং একজন সখিনা