জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে আহলে বায়তে রাসূল (দ.) স্মরণে ১০ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক শাহাদাতে কারবালা মাহফিলের গতকাল বৃহস্পতিবার ৭ম দিন অতিবাহিত হয়েছে। মাহফিলে আলোচকরা বলেছেন, সুন্নিয়তই ইসলামের শাশ্বত দর্শন ও মূলধারা। সুন্নিয়ত ও সুফিবাদই হচ্ছে ইসলামের নির্যাস ও চূড়ান্তভাবে নাজাতের পথ। দুনিয়াজুড়ে আজ নিরীহ মানবতার ওপর জঘন্য জুলুম ও অসহনীয় নিপীড়ন চলছে। দেশে দেশে এখনো রক্তারক্তি, সংঘাত ও কারবালার প্রতিধ্বনি শোনা যায়। মজলুম মানবতার আহাজারি আর্তনাদে সমগ্র বিশ্ব আজ বাষ্পরুদ্ধ। ফিলিস্তিনের গাজায় প্রতিদিনই ঝরছে নিরীহ নারী–শিশুদের প্রাণ। অথচ বিশ্ব বিবেক আজ নীরব। মজলুম মানুষকে রক্ষায় এই নীরবতা চোখ বুজে আর মেনে নেওয়া যায় না। বিশ্বব্যাপী শান্তি, সম্প্রীতি, গণঐক্য ও জননিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় মানববাদি সুন্নিয়ত ও সুফিবাদি দর্শনকে সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে। সুন্নিয়ত ও সুফিবাদি দর্শনে প্রতিষ্ঠিত থাকা ছাড়া বিশ্ব মুসলমানরা কখনো নিষ্কৃতি পাবে না। মাহফিলে বিশেষ অতিথি ছিলেন, নগর বিএনপির আহ্বায়ক এম এরশাদ উল্লাহ। তিনি বলেন, এদেশসহ পৃথিবীতে ইসলাম এসেছে ত্যাগের মাধ্যমে। নবী রাসূল আউলিয়ায়ে কেরাম ইসলাম প্রচার প্রসারে জাগরণ ঘটিয়েছেন। অনেকেই হয়তো জানেন না এই জমিয়তুল ফালাহ মসজিদের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। আজ হতে ৪৫ বছর আগে শহীদ জিয়া মাত্র এক টাকার বিনিময়ে এই মসজিদের জায়গার সংস্থান করেছেন। একটি সমৃদ্ধ সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে সকলকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখতে হবে। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন শাহাদাতে কারবালা মাহফিল পরিচালনা পর্ষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তিনি প্রিয়নবীর (দ.) হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, যে ব্যক্তি ইমাম হাসান–হোসাইনকে ভালোবাসে সে যেন আমাকেই ভালোবাসে। যে তাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করলো সে যেন আমার সঙ্গেই শত্রুতা করলো। ঈমানদার ছাড়া কেউ হযরত আলী (রা.) কে ভালোবাসবে না। আর মুনাফিক ছাড়া কেউ তাঁর প্রতি শত্রুতা পোষণ করবে না। বিশেষ অতিথি আমির হোসেন সোহেল বলেন, আমরা এ অঞ্চলে নবী রাসূল পাইনি। ইসলাম পেয়েছি ওলী বুজুর্গের মাধ্যমে। ওলী বুজুর্গের দোয়া ও উসিলায় অনেক অসাধ্য বিষয় সহজেই পূরণ হয় এর বাস্তব দৃষ্টান্ত আমি অনুভব করেছি। আহলে বায়তে রাসূলের (দ.) প্রতি মহব্বত ও আনুগত্য যে কতটা জরুরি তা দেখিয়ে গেছেন আল্লামা জালাল উদ্দিন আলকাদেরী (রহ.)। বর্তমানে এ মাহফিলের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন সুফি মিজানুর রহমান। আলোচনা করেন, মোহাম্মদপুর কাদেরিয়া তৈয়বিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন আল–আজহারি, উরকিরচর মুহাম্মদিয়া গাউছিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মুহাম্মদ হাসান রেজা, আবদুল মুস্তফা আবদুর রহিম আজহারি, গোলাম রাব্বানি কাসেমী (ঢাকা), গহিরা কামিল মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মহিউদ্দিন তাহেরী। পরিচালনা পর্ষদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক দিলশাদ আহমেদের নির্মিত বিগত দিনের চমৎকার ভিডিও ডকুমেন্টারি মাহফিলে পরিবেশিত হয়। কোরআন মজিদ থেকে তেলাওয়াত করেন ক্বারী মুহাম্মদ ওসমান সিদ্দিকি। নাতে রাসূল (দ.) পরিবেশন করেন মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম। মাহফিলে অতিথি ছিলেন, জামেয়া আহমদিয়ার শায়খুল হাদিস মুহাম্মদ সোলাইমান আনসারী, দরবারে হাশেমীয়া আলিয়ার সাজ্জাদানশীন মুফতি ক্বাযী মুহাম্মদ আবুল এরফান হাশেমী, আহলা দরবারের শাহাজাদা সৈয়দ এমদাদুল ইসলাম, পিএইচপি ফ্যমিলির পরিচালক আমির হোসেন সোহেল ও জহিরুল ইসলাম রিংকু, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া, এমডিএসএ গ্রুপের সাজ্জাদ আরেফিন আলম, সাবেক লায়ন্স জেলা গভর্নর লায়ন এস এম শামসুদ্দীন। মাহফিল সঞ্চারনা করেন, ড. জাফর উল্লাহ ও হাফেজ মাওলানা আহমদুল হক। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।