চট্টগ্রামের তরুণরা ঝড়-ঝাপটা, বাধা-বিপত্তি পেরিরে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে নিজেদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। প্রমাণ করছে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব। চট্টগ্রামের অনেক তরুণ বিদেশে বাংলাদেশকে মেলে ধরেছেন। এমনি পাঁচ তরুণের কথা জানা যাক।
ডা. মেহতাব গাজী রহমান
অল্প বয়সেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক
চট্টগ্রামের মেহতাবের কাছে এখন মনোরোগের চিকিৎসার জন্য যাচ্ছে ব্রিটিশরা, কেবল তাই নয় বিভিন্ন দেশের মানুষের কাছে ছড়িয়ে পড়েছে তার সুনাম। যুক্তরাজ্য সরকারের মূল স্বাস্থ্য সংস্থা এনএইচএসের (ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস) সেন্ট্রাল অ্যান্ড নর্থ লন্ডনের মেন্টাল হেলথ সার্ভিসের ফিজিক্যাল হেলথের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। মেধাবী মেহতাব এক সুযোগেই পাস করেছেন প্রতিযোগিতামূলক সব পরীক্ষায়, অর্জন করেছেন একের পর এক সম্মানজনক ডিগ্রি। নির্বাচিত হয়েছেন অত্যন্ত সম্মানজনক যুক্তরাজ্যের রয়্যাল কলেজ অফ সাইকিয়াট্রিস্টেও বোর্ড মেম্বার। আমন্ত্রিত শিক্ষক হিসেবে আছেন বিশ্বের শীর্ষ দশ মেডিকেল স্কুলের একটি ইম্পেরিয়াল কলেজ স্কুল অফ মেডিসিনে। চট্টগ্রামের সানশাইন গ্রামার স্কুল থেকে ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেল সম্পন্ন করার পর মেহতাব পড়াশোনা করেন ডেভিড গেম কলেজ, কুইন মেরী ইউনিভার্সিটি, বার্টস অ্যান্ড দি লন্ডন এসএমডিতে। স্বনামধন্য শিক্ষাবিদ সাফিয়া গাজী রহমানের সন্তান ডা. মেহতাব কাজ করে যাচ্ছেন বাংলাদেশের জন্যও, জড়িত আছেন সানশাইন চারিটিজের সাথে, পাশে দাঁড়িয়েছেন শত শত অনাথ শিশু, অসচ্ছল শিক্ষার্থী ও রোগীদের। চট্টগ্রামের খুলশীতে বড় হওয়া মেহতাব তার সব কাজের অনুপ্রেরণা হিসেবে তার মা অধ্যক্ষ সাফিয়া রহমানকেই আইডল মনে করেন। পরিবার থেকেই তিনি শিক্ষা পেয়েছেন মানবিকতার, মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। সামনে দেশের স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করার ইচ্ছে তাঁর।
ড. অভিজিৎ কুমার নাগ
সাইবার নিরাপত্তা দিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রে
সাইবার সিকিউরিটি বা তথ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজের প্যাটেন্ট অর্জন করেছেন চট্টগ্রামের অভিজিৎ কুমার নাগ। তার এই নিরাপত্তা পদ্ধতি ইতিমধ্যে ব্যবহার শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় সব প্রতিষ্ঠান। তিনি বর্তমানে টেক্সাস এঅ্যান্ডএম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যুক্ত আছেন। সাইবার নিরাপত্তা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তার গবেষণার মূল বিষয়। এছাড়াও, অভিজিৎ সাইবার সিকিউরিটি শিক্ষামূলক পাঠ্যক্রমের একটি অভিনব পদ্ধতি বিকাশের জন্য একটি প্রজেক্ট করছেন। অভিজিৎ মূলত মাল্টিফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন সিস্টেমের বিভিন্ন দিক এবং কিভাবে তারা সংবেদনশীল তথ্য অ্যাঙেসের জন্য উচ্চ স্তরের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারে সে সম্পর্কে গবেষণা করছেন। তাঁর গবেষণার মূল বিষয়-সংবেদনশীল তথ্য সুরক্ষা এবং সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়ানো বিষয়ক অভিনব সমাধান বের করা। এছাড়াও, সাইবার সিকিউরিটি সম্পর্কিত পাঠ্যক্রমের উদ্ভাবনের জন্য আমি বিভিন্ন ধরনের শিক্ষাগত পদ্ধতি এবং তাদের বিকাশের জন্য কাজ করব। অভিজিৎ অ্যাডাপ্টিভ মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশনের উপর একটি ইউটিলিটি পেটেন্টের সহউদ্ভাবক, যা বিদ্যমান পরিবেশগত অবস্থানের উপর ভিত্তি করে চিহ্নিত করার জন্য একটি স্কেলেবল, বলিষ্ঠ এবং গতিশীল সমাধান সরবরাহ করে। তিনি একটি স্নাতক স্তরের পাঠ্যপুস্তকের সহলেখক, বইটি হচ্ছে-‘অ্যাডভান্সস ইন ইউজার অথেন্টিকেশন’। এটি আন্তর্জাতিক স্বনামধন্য প্রকাশনী স্প্রিংগার থেকে প্রকাশিত। এই বইটি ১৪ হাজারের বেশি ডাউনলোড হয়েছে। এটি প্রকৌশল এবং কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের অনুশীলনের জন্য পেশাদারী উন্নয়ন এবং সার্টিফিকেশন পাঠক্রম জন্য একটি পাঠ্যপুস্তক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অমল ভূষণ নাগ ও বনানী নাগের সন্তান অভিজিতের জন্ম এবং বেড়ে উঠা চট্টগ্রাম শহরে। বরাবরই তুখোড় মেধাবী অভিজিৎ চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে সম্মিল্লিত মেধা তালিকায় ৪র্থ স্থানসহ এসএসসি এবং চট্টগ্রাম কলেজ থেকে মেধা তালিকায় ৫ম স্থান করেন। এরপর বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ইউনিভার্সিটি অফ মেমফিস থেকে ২০১২ সালে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এমএস ডিগ্রি নেন। এরপর ২০১৬ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। চট্টগ্রাম নিয়ে অভিজিতের অনেক স্বপ্ন। তিনি বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম শহরে বড় হয়েছি। আমার জন্মস্থানের জন্য আমার সবসময় একটি বিশেষ অনুভূতি কাজ করে। আমি আমার জন্মশহর সম্পর্কে স্বপ্ন দেখি যে একদিন এটি দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের শিক্ষা এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে। চট্টগ্রাম হল সবচেয়ে বড় সমুদ্র বন্দর আশপাশ এলাকায বিবেচনায় এবং এই বন্দর সুস্পষ্টভাবে শহরের ভবিষ্যত বৃদ্ধি রূপায়নে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে।’
মনোজ বড়ুয়া
অস্ট্রেলিয়ার সড়ক ব্যবস্থাপনায় সেরা
সুযোগ পেলে চট্টগ্রামের মেধাবীরা যে বিশ্বের যে কোন প্রান্ত জয় করতে পারে তার আরেকটি দৃষ্টান্ত মনোজ বড়ুয়া। তাঁর বেড়ে ওঠা নগরীর কাপাসগোলায়। দিলীপ বড়ুয়া ও ডেইজি বড়ুয়ার সন্তান মনোজ পড়াশোনা করেন চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) এবং এমবিএ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। সবচেয়ে কম বয়সে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন সড়ক নিরাপত্তা এবং যানজট সমস্যার আধুনিক প্রযুক্তিগত সমাধান নিশ্চিত করার জন্য। প্রতি বছর মনোজের একটি দল ৯০ থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেন এবং তাঁর সেই দল উন্নয়ন প্রকল্প সংলগ্ন রোড নেটওয়ার্কের ধারণক্ষমতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে এবং সে অনুসারেই প্রকল্পের অনুমোদিত হয়। কাজের প্রতি তার আগ্রহ, দক্ষতা এবং আন্তরিকতার কারণে মনোজের অর্জনের ঝুলিটাও যথেষ্ট ভারী। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার স্বল্পসংখ্যক রোড সেফটি অডিটরদের একজন হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন মনোজ। এছাড়া ট্রান্সপোর্ট প্ল্যানিং, ট্রাফিক সিগন্যাল প্ল্যান ও দুর্ঘটনা বিশ্নেষণ এবং সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক অসংখ্য পেশাদারি সনদ অর্জন করেছেন। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে বড় ট্রান্সপোর্ট অ্যান্ড ট্রাফিক বিভাগের কো-অর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মনোজ। পেয়েছেন এঙিলেন্স ইন রোড সেফটি অ্যাওয়ার্ড ২০২০-২০২১, ইনভেশন ইন ট্রাফিক অ্যাওয়ার্ড অস্ট্রেলিয়া ২০১৯-২০২০। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার চারটি সড়ক নিরাপত্তা পুরস্কারের মধ্যে তিনটি এবং ২০১৬ সালের ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ট্রাভেলস্মার্ট চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই মনোজ খুব আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, তিনি মনে করেন যে পৃথিবীতে এমন কোনো কাজ নেই যেটা নিয়মানুবর্তিতা ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে চেষ্টা করলে সফলতা অর্জন করা যায় না। তাঁর এই অবস্থা তিনি অর্জন করেছেন একমাত্র তাঁর আত্মবিশ্বাস, পরিশ্রম এবং ভালো করার অদম্য ইচ্ছা থেকেই। তিনি তাঁর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন করতে চান। তিনি বলেন, ‘আমার ইচ্ছা, আমার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে আমার প্রাণের শহর চট্টগ্রামের সড়ক নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন করা। বাংলাদেশে যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি কিন্তু সে তুলনায় রাস্তার ধারণক্ষমতা অনেক কম, প্রতি বছরই সড়ক দুর্ঘটনায় অনেক প্রাণহানি ঘটে। দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের সড়ককে নিরাপদ করতে চাই।’ মনোজের স্বপ্ন হল তিনি চট্টগ্রাম শহরকে বিশ্বের নামকরা দূষণমুক্ত ও নিরাপদ স্মার্ট সিটিতে রূপান্তর করা-যেখানে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটবে না এবং মানুষের দৈনন্দিন ভ্রমণ হবে নিরাপদ, আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য।
শাফকাত ফাহমিদ
টিকটকের জনপ্রিয়তার নেপথ্যে
বিশ্ববিখ্যাত টিকটিকের প্রোডাক্ট পলিসি বিভাগে কাজ করছেন চট্টগ্রামের শাফকাত ফাহমিদ। মেধাবী সাফকাত সাইডার ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে ও এবং এ লেভেল শেষ করে বৃত্তি নিয়ে পড়তে যায় ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুরে। ২০১৭ সালে সাফকাত সিঙ্গাপুর বারে আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়। ছোটবেলা থেকেই তুখোড় বিতার্কিক সাফকাত পড়াশোনা করে আইন বিষয়ে। সাফকাত নির্বাচিত হয়েছিলেন মার্কস অলরাউন্ডার এবং দৃষ্টি আন্তঃ ইংরেজি বিতর্ক প্রতিযোগিতার তিনবারের সেরা বিতার্কিক। স্নাতক সম্পন্ন করার পর সাফকাত যোগদান করে ফেসবুকের আয়ারল্যান্ড কার্যালয়ে মার্কেট অ্যানালিস্ট হিসেবে। ফেসবুকের মত জায়গায় অনেকগুলো তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ধাপ পেরিয়ে সুযোগ পাওয়া যে কারো জন্য অনেক বড় অর্জন। চট্টগ্রাম নিয়ে সাফকাত বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যে প্রাচ্যের রাণী হিসেবে বিখ্যাত ছিল। ভবিষ্যতের শহরে শুধু কংক্রিটের জঙ্গল নয়, সবুজ ঘাস এবং পরিষ্কার তাজা বাতাস থাকাটাও জরুরি। আমার স্বপ্ন হল চট্টগ্রামের উন্নয়ন এবং নগরায়নের সাথে সাথে এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যও যেন সংরক্ষিত থাকে।’
ড. এস এম আশেকুজ্জামান রিজভি
ডেইরি বর্জ্য ব্যবহার উপযোগী করার প্রযুক্তি উদ্ভাবন
আয়ারল্যান্ডে ডেইরি বর্জ্যকে ব্যাবহার উপযোগী করার প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কাজে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আশেকুজ্জামান। কুতুবদিয়ার সন্তান এবং নগরীর দেবপাহাড়ে বেড়ে ওঠা রিজভী বর্তমানে আয়ারল্যান্ডের সরকারি প্রতিষ্ঠান আইরিশ কৃষি এবং খাদ্য উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত আছেন। গবেষণা করছেন আয়ারল্যান্ডের পরিবেশ বিষয়ক গবেষণা কেন্দ্রে, ডেইরি প্রসেসিং টেকনোলজি সেন্টার (ডিপিটিসি) প্রোগ্রামে। রিজভীর কাজের মূল উদ্দেশ্য হলো ডেইরি শিল্পের বর্জ্য পদার্থকে পরিবেশ উপযোগী প্রক্রিয়ায় কৃষিকাজে ব্যবহারযোগ্য জৈবসারে রূপান্তরিত করা। চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম কলেজ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়াশোনা করেছেন ড. আশেকুজ্জামান রিজভী। পরবর্তীতে পিএইচডি করেছেন যুক্তরাজ্যের গ্লাসগো ক্যালেডোনিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে। আশেকুজ্জামান রিজভী বলেন, ‘একজন পরিবেশ বিজ্ঞানী হিসেবে আমার গবেষণাকাজের মধ্যে আরও রয়েছে- দূষিত পানির পরিশোধন প্রক্রিয়ার উন্নয়ন ও উদ্ভাবন, খাওয়ার পানি থেকে স্বল্প খরচে আর্সেনিক দূরীকরণের প্রযুক্তি উদ্ভাবন, পরিবেশ দূষণ রোধের উদ্দেশ্যে শিল্প-কারখানার বর্জ্য ও জৈব বর্জ্যকে পরিবেশ উপযোগী করে পুনঃব্যবহার প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন। যেমন- জৈব বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস উৎপাদন।’ ইতিমধ্যে তার অর্জনও কম নয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় চট্টগ্রাম বোর্ডে সম্মিলিত মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া রিজভী বুয়েট থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি নিয়ে ডেনিশ স্টেট স্কলারশিপ নিয়ে ডেনমার্কে আলবর্গ ইউনিভার্সিটিতে মাস্টার্স করেন। এই সময়ে ‘ডানিডা রিসার্চ ট্রাভেল গ্রান্ট’ও অর্জন করেন গবেষণা কার্জক্রমের জন্য। এরপর পিএইচডি গবেষণা কাজের জন্য যুক্তরাজ্যে গ্লাসগো ক্যালেডনিয়ান ইউনিভার্সিটিতে যান। তিনি জানান, বাংলাদেশের আর্সেনিক দূষিত টিউবওয়েলের পানিকে স্বল্প খরচে বিশুদ্ধকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণার জন্য তিনি অর্জন করেন সম্মানজনক দ্য রয়েল সোসাইটি অফ এডিনবার্গ, স্কটল্যানাড গবেষণা অনুদান। ইতিমধ্যে তার ১০টির বেশি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। কুতুবদিয়ার ছৈয়দুর রহমান এবং বেগম আলতাফুন্নেসার সন্তান রিজভী মনে করেন, ‘সঠিক পরিকল্পনা, নিষ্ঠা, অনুপ্রেরণা এবং সহিষুষ্ণতার সমন্বয় আমাকে এই অবস্থানে আসতে সাহায্য করেছে।’ বর্তমানে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে পরিবেশ সংক্রান্ত নানা সমস্যা রয়েছে। এসব সমসাময়িক সমস্যাগুলোকে মাথায় রেখেই রিজভী এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ার এবং সায়েন্টিস্ট হওয়ার অনুপ্রেরণা পান। রিজভী মনে করেন তার গবেষণাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ সংক্রান্ত সমস্যার মোকাবেলা করতে পারে। তার ভাষায়, ‘পেশাগত বিবেচনায় আমি স্বপ্ন দেখি, আজ থেকে ২৫ বছর পর চট্টগ্রামসহ সারাদেশে হবে পরিকল্পিত নগরায়নের দেশ। নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার, সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও পরিবেশ সহায়ক পুনঃব্যবহার (রিসাইক্লিং) এবং কৃষিকাজে প্রাধান্য পাবে জৈব সারের ব্যবহার।’ সে ক্ষেত্রে তিনি তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চান।