জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বিশ্বনেতাদের বলিষ্ঠ সিদ্ধান্তের প্রত্যাশায় স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে শুরু হয়েছে বহুল প্রতীক্ষিত কপ২৬। গতকাল রোববার শুরু হওয়া এ জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলনে প্রায় ২০০টি দেশের প্রতিনিধিরা ২০৩০ সালের মধ্যে কীভাবে কার্বন নিঃসরণ কমাবেন এবং পৃথিবী নামক গ্রহকে সাহায্য করবেন, তার ঘোষণা দেবেন। মানুষের জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের কারণে নির্গত গ্রিন হাউস গ্যাসে বিশ্ব ক্রমশ উষ্ণ হয়ে উঠছে। সে কারণেই বিজ্ঞানীরা জলবায়ু সংক্রান্ত ভয়াবহ বিপর্যয়কর পরিস্থিতি এড়াতে দ্রুত পদক্ষেপ চাইছেন। না হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে বলে সতর্কও করেছেন তারা। খবর বিডিনিউজের।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, এই সম্মেলন বিশ্বের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার মুহূর্ত। দু’সপ্তাহের এই সম্মেলনের প্রাক্কালে নেতাদেরকে তা সফল করার তাগিদ দিয়ে জনসন বলেছেন, আমরা এ মুহূর্তকে কাজে লাগাতে পারব নাকি ফসকে যেতে দেব প্রত্যেকেই সে প্রশ্ন করছে।
কপ২৬ সম্মেলনের প্রেসিডেন্ট অলোক শর্মা বলেছেন, পাঁচ বছর আগে প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে আমরা যা অর্জন করেছিলাম এবার তেমন চুক্তিতে পৌঁছা কঠিন হবে। প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বের দেশগুলো তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করার লক্ষ্যমাত্রা নিতে একমত হয়েছিল। কিন্তু বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এখন ২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের পথে আছে, যা জলবায়ু বিপর্যয় ঘটাতে পারে, বলছে জাতিসংঘ। তিনি বলেন, তাপমাত্রা নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখাটা এখন নেতাদের ওপর নির্ভর করছে। তাদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন এবং তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার ওই লক্ষ্য আমরা কীভাবে পূরণ করবে সে ব্যাপারে আমাদের একযোগে একমত হওয়া দরকার।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপদাহ, বন্যা ও দাবানলের মতো চরম আবহাওয়াজনিত দুর্যোগগুলোর তীব্রতা বাড়ছে। গত দশক ছিল এখন পর্যন্ত নথিভুক্ত ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ দশক। পরিস্থিতি মোকাবেলায় দ্রুত সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়া যে প্রয়োজন, সে বিষয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকাররা একমতও হয়েছে। জাতিসংঘের জলবায়ু সংক্রান্ত এ আয়োজন যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত হওয়া অন্যতম বড় সম্মেলন। সম্মেলনটি গত বছর হওয়ার কথা থাকলেও মহামারীর কারণে এক বছর পিছিয়ে যায়। সম্মেলনে অংশ নিতে অনেক নেতাই গ্লাসগো গেছেন রোমে জি-২০ সম্মেলন শেষ করে।