বিশেষ ফ্লাইটে দুবাই চলে গেছেন আনভীরের স্ত্রী-সন্তান সহ আটজন

আজাদী অনলাইন | শুক্রবার , ৩০ এপ্রিল, ২০২১ at ২:২৩ পূর্বাহ্ণ

কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার একমাত্র আসামি বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্য দেশ ছেড়ে চলে গেছেন।
করোনাভাইরাস মহামারীতে নিয়মিত ফ্লাইট চলাচলে বিধিনিষেধের মধ্যে দেশের শীর্ষ এই ব্যবসায়ী পরিবারের সদস্যরা ভাড়া করা একটি বিমানে বৃহস্পতিবার রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের উদ্দেশে রওনা হন বলে বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন এবং এপিবিএনের একাধিক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। বিডিনিউজ
বসুন্ধরা এমডির পরিবারকে বিশেষ ফ্লাইটের অনুমতি দেওয়ার কথা জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান।
বৃহস্পতিবার রাতে তিনি বলেন, “বুধবার তারা একটি বিশেষ ফ্লাইটের অনুমতি চেয়েছিলেন। আজ তাদের দেশ ছাড়ার কথা।”
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানন্দরে দায়িত্বরত এপিবিএনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ভাড়া করা ঐ উড়োজাহাজটির ফ্লাইট নম্বর ভিপিসি১১। রাত ৯টার কিছুক্ষণ আগে সেটি ঢাকা ত্যাগ করে।

এ বিশেষ ফ্লাইটেই দেশ ছেড়েছেন সায়েম সোবহান আনভীরের পরিবারের ৮ জন

বিমানের গতিপথ নির্দেশক ওয়েবসাইট রাডারবক্সে দেখা যায়, ঢাকা শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে রাত ৮টা ৫৬ মিনিটে রওনা হয় ফ্লাইটটি। বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ৬ মিনিটে এটি দুবাইয়ের আল মাকতুম বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনের একজন কর্মকর্তা বলেন, ঐ বিশেষ ফ্লাইটে যাত্রী মোট আটজন। তাদের মধ্যে সায়েম সোবহান আনভীরের স্ত্রী সাবরিনা সোবহান, তাদের দুই সন্তান, ছোট ভাই সাফওয়ান সোবহানের স্ত্রী ইয়াশা সোবহান ও তার মেয়ে এবং দুই পরিবারের তিনজন গৃহকর্মী রয়েছেন।
আরেকটি ফ্লাইটে সাফওয়ান সোবহানেরও দুবাই যাওয়ার কথা রয়েছে বলে ইমিগ্রেশনের আরেকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

ভিপিসি১১ ফ্লাইটটির গতিপথ

কলেজছাত্রী মুনিয়ার আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় আসামি আনভীরের দেশত্যাগের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে তার পরিবারের অন্য কারও ক্ষেত্রে এরকম বিধিনিষেধ আদালত থেকে আসেনি।
বেবিচক চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা বিশেষ ফ্লাইটের অনুমতি দিয়েছি ঠিকই তবে তাদের বলা হয়েছে যারা ঐ ফ্লাইটে যাবেন তাদের স্পেশাল ব্রাঞ্চের অনুমতি নিয়ে যেতে হবে।”
এ বিষয়ে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) কর্মকর্তাদের কারও বক্তব্য জানা যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর সেই রাতেই আনভীরের বিরুদ্ধে মামলা করে ঐ তরুণীর পরিবার।
পুলিশের আবেদনে আদালত পরদিন আনভীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিলেও তার আগেই তিনি দেশ ছেড়েছেন বলে গুঞ্জন ছড়ায়। এর মধ্যেই বুধবার তার পক্ষে হাইকোর্টে আগাম জামিনের একটি আবেদন জমা পড়ে। তবে বৃহস্পতিবার সেই আবেদনের শুনানি করেনি আদালত।
আনভীরের আগে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন তার ভাই সাফিয়াত সোবহান সানবীর।
বসুন্ধরা কমিউনিকেশন্সের পরিচালক হুমায়ুন কবীর সাব্বির হত্যাকাণ্ডের পর ২০০৬ সালে সানবীর দেশ ছেড়েছিলেন। তারপর এমডির দায়িত্বে আসেন আনভীর।
২০১১ সালে সাব্বির হত্যামামলায় খালাস পাওয়া সানবীর পরে দেশে ফিরলেও এমডি পদে আর তাকে ফেরাননি তাদের বাবা বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমদ আকবর সোবহান (শাহ আলম)।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ‘জিহ্বা আধা ইঞ্চি বাইরে দাঁত দিয়ে কামড়ানো ছিল’
পরবর্তী নিবন্ধপাহাড়তলীতে ছুরিকাঘাতে খুন